Riyadh

Sandstorm: বালির ঝড়ে বিপর্যস্ত আরব, হাসপাতালে ভর্তি কয়েক হাজার মানুষ

ব্যস্ত শহর রিয়াধ অবশ্য আজও সচল ছিল। কিন্তু রাস্তায় দৃশ্যমানতা ছিল ভয়ানক কম। তাই ট্র্যাফিকের গতি ছিল ঢিমে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রিয়াধ শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২২ ০৬:০৪
Share:

উঠেছে বালুঝড়। ধুলোয় ঢেকেছে মানামার আকাশ। ছবি রয়টার্স।

এক হাত দূরের জিনিসও অস্পষ্ট। আকাশ লাল। বাতাসে ভাসছে বালি। শ্বাস নেওয়াও দুষ্কর। ভয়াবহ ধুলোর ঝড়ে বিপর্যস্ত পশ্চিম এশিয়া। এর মধ্যে সর্বশেষ আক্রান্ত সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধ। বুধবার ধুলোর ঝড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অন্তত ১২৮৫ জন। রাতারাতি বন্ধ করে দিতে হয়েছে স্কুল-কলেজ। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফল!

Advertisement

ব্যস্ত শহর রিয়াধ অবশ্য আজও সচল ছিল। কিন্তু রাস্তায় দৃশ্যমানতা ছিল ভয়ানক কম। তাই ট্র্যাফিকের গতি ছিল ঢিমে। কয়েকশো মিটার দূর থেকেও গগণচুম্বী বাড়িগুলো দেখার উপায় নেই। বাড়ি থেকে বেরোনোর উপায় ছিল না বাসিন্দাদের। খুব প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় কমই লোকজন বেরিয়েছিলেন। এক পাকিস্তানি নির্মাণকর্মী বলেন, ‘‘খোলা আকাশের নীচে কাজ করতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। প্রায় অসম্ভব। কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম মুখ। তাতেও বারবার মুখ ধুতে হচ্ছিল।’’ দেশের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পূর্ব থেকে এই বালির ঝড় ক্রমে ধেয়ে এসেছে পশ্চিমের দিকে। ইরাক, ইরান, জর্ডন আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, পুরু ধূসর বালির স্তর ক্রমশ ঢেকে ফেলবে মক্কা, মদিনাকেও।

পশ্চিম এশিয়ার বেশ কিছু দেশ এ বছর বালির ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়েছে বারবার। মাঝ-এপ্রিল থেকে অন্তত আটটি বালুঝড়ে আক্রান্ত ইরাক। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ভূমিক্ষয়, প্রবল খরা, কম বৃষ্টিপাত— এই সবের জন্য এই পরিস্থিতি। আর এর পিছনে রয়েছে অবশ্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। বাগদাদে শেষ বালির ঝড় উঠেছিল গত সোমবার। শ্বাসকষ্ট নিয়ে অন্তত ৪ হাজার মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। স্কুল-কলেজ-অফিস বন্ধ করে দিতে হয় রাতারাতি। থমকে যায় বিমানবন্দরও।

Advertisement

ইরানেও একই পরিস্থিতি। গত কাল তারা ঘোষণা করেছে, খারাপ আবহাওয়ার জন্য সরকারি কার্যালয় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। স্কুলগুলিও বন্ধ করা হয়েছে। তেহরান জানিয়েছে, বাতাসে প্রতি ঘন মিটারে ভাসছে ১৬৩ মাইক্রোগ্রাম বালিকণা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র রিপোর্ট অনুযায়ী, বাতাসে ধুলোবালির উপস্থিতির সর্বোচ্চ সীমা প্রতি ঘনমিটারে ২৫ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ সর্বোচ্চ সীমার থেকেও ৬ গুন বেশি।

কুয়েতে সোমবার বালির ঝড়ে বন্ধ করে দিতে হয় বিমান পরিষেবা। এমনকি দেশের তিনটি সমুদ্র বন্দরেও কাজকর্ম থমকে যায়। মঙ্গলবারও স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল এ দেশে। আজ থেকে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।

পশ্চিম এশিয়ায় বালির ঝড় অচেনা নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে তা মারাত্মক বেড়েছে। এর জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই কাঠগড়ায় তুলছে বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু জলবায়ুর ভোলবদলের জন্য দায়ী অনিয়ন্ত্রিত ভাবে মাটি কাটা, জঙ্গল ধ্বংস করা, নদীর জলের অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ব্যবহার, নদীর গতিপথ আটকে কৃত্রিম জলাধার তৈরি। এমন অসংখ্য কারণ।

জর্ডনের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ হাসান আবদুল্লা বলেন, ‘‘শুকনো, ঠান্ডা হাওয়া বয়ে নিয়ে যাচ্ছে বালির স্তর। ঢেকে ফেলছে সিরিয়া, পূর্ব ইরাককে। সমগ্র আরবের অবস্থাই তাই।’’ আবদুল্লা জানান, টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর জলস্তর কমে যাওয়া এই পরিস্থিতির অন্যতম কারণ। বার্ষিক বৃষ্টিপাতও মারাত্মক কমেছে। ভূমিক্ষয় তো রয়েইছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement