বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল চিত্র।
সীমান্ত অঞ্চলে ‘শান্তি ও সংহতি নিশ্চিত করা’ এবং দ্বিপাক্ষিক ‘বকেয়া বিষয়গুলির সমাধান’ করার লক্ষ্যে আজ গোয়ায় এসসিও-র পার্শ্ববৈঠকে মিলিত হলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী কিন গ্যাং। এই বিষয়গুলি নিয়ে আজ তাঁদের ‘বিস্তারিত আলোচনা’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়শঙ্কর।
দু’মাস আগেই নয়াদিল্লিতে জি২০-র পার্শ্ববৈঠকে এই দুই মন্ত্রীর কথা হয়েছিল। এর পরে গত সপ্তাহে এসসিও-র প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ে ভারত এবং চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ফের সীমান্ত নিয়ে আলোচনা হয়। তখন রাজনাথ সিংহ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চল স্বাভাবিক না হলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও ঠিক হবে না। আজকের বৈঠকেও ভারতের অবস্থানেরই পুনরাবৃত্তি করেছেন জয়শঙ্কর। জানিয়েছেন, এই সমস্যাকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে রেখে আর পাঁচটা বিষয়ের মতো সীমান্ত নিয়েও আলোচনা চালু রাখতে একেবারেই রাজি নয় তাঁর সরকার। বিদেশমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছিলেন, আমেরিকা, ইউরোপ, রাশিয়া বা জাপান, যে কোনও দেশই হোক না কেন, ভারত তাদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির জন্য চেষ্টা করছে। কিন্তু ‘সীমান্ত বিরোধ’ এবং ‘সম্পর্কের অস্বাভাবিক প্রকৃতির’ কারণে চিন কিছুটা আলাদা হয়ে যাচ্ছে। এটা তাদের সীমান্ত সংক্রান্ত চুক্তি লঙ্ঘনের ফলাফল। আজকের বৈঠকে এই কথাটাই চিনের বিদেশমন্ত্রীকে বিস্তারিত ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন জয়শঙ্কর।
সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন করে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিনের বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন এবং তার আগ্রাসী আচরণের নিন্দা গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে করে আসছে ভারত। গত সপ্তাহে উভয় দেশের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে ভারত দৃঢ় ভাবে চিনকে জানিয়ে দিয়েছে, বেজিংয়ের তরফ থেকে সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তিকে ‘ক্ষয়’ করেছে। সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্ত সমস্যা বর্তমান চুক্তি অনুসারেই সমাধান করতে হবে। ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দীর্ঘ ৪৫ বছর পরে দু’দেশের সীমান্ত সংঘর্ষে সেনার মৃত্যু হয়। ভারতের তরফে কর্নেল-সহ ২০ জন এবং চিনের তরফে ৪৩ জন নিহত হয়েছিলেন বলে জানা যায়। ভারতের দাবি, চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা না-মানার ফলেই লাদাখের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছিল।