এস জয়শঙ্কর।
সংসদের বাদল অধিবেশনে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার হওয়ার পরে বিদেশযাত্রা বেড়ে গিয়েছিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। প্রতিবেশী রাষ্ট্র-সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে তাঁকে বোঝাতে হয়েছিল মোদী সরকারের ওই পদক্ষেপের কার্য-কারণ। তার পরেও কাশ্মীর থেকে কড়াকড়ি তোলার জন্য সওয়াল করে চলেছে আন্তর্জাতিক শিবির। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এ বার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়েও একই ভাবে বিদেশে পাড়ি দিতে হবে জয়শঙ্করকে।
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির পাশাপাশি মুখ খুলছে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে যাওয়ার কথা রয়েছে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের। ভারত ও আমেরিকার বাণিজ্যিক
এবং কৌশলগত বিভিন্ন বিষয় পূর্বনির্ধারিত রয়েছে আলোচ্যসূচিতে। কিন্তু কূটনৈতিক শিবির মনে করছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই সংলাপের অনেকটাই ঘুরপাক খাবে নতুন নাগরিকত্ব বিল নিয়ে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে গত কালই কথার লড়াই হয়েছে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের বিদেশ মন্ত্রক সংক্রান্ত কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নাগরিকত্বের জন্য কোনও ধর্মীয় পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি মূল গণতান্ত্রিক ভিতকেই দুর্বল করে। পাশাপাশি, আমেরিকার স্বশাসিত প্রভাবশালী সংস্থা ‘ইউএস কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ (ইউএসসিআইআরএফ) অমিত শাহের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে জয়শঙ্করের কাছে ট্রাম্প সরকার যে বিশদে মুসলিম শরণার্থীদের বর্তমান মর্যাদা নিয়ে জানতে চাইবে, তেমন প্রস্তুতি নিয়েই এগোচ্ছে সাউথ ব্লক।
শুধু আমেরিকাই নয়। ভারতে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূত উগো আস্টুটো তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব আইন ভারতীয় সংবিধানের ‘সুউচ্চ মানের’ সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে বলেই তাঁদের আশা। উগো বলেন, ‘‘ভারতীয় সংবিধান আইনের চোখে সবাইকে সমান মর্যাদা দেয়। কোনও রকম বিভাজনকে প্রশ্রয় দেয় না। এই নীতি আমরাও ভাগ করে নিয়েছি।’’