ছবি: পিটিআই।
অতিমারি আক্রান্ত বিশ্বে নতুন করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঝালিয়ে নেওয়া। সেই সঙ্গে বহুপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক স্তরে দু দেশের মধ্যে তৈরি হওয়া কিছু মতান্তরকে জোড়া লাগানো। চিন নিয়ে মধ্যস্থতা করা। সর্বোপরি চলতি বছরে ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া। একই সঙ্গে অনেকগুলি লক্ষ্য নিয়ে আজ দু’দিনের সফরে দিল্লি পৌঁছলেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
গত এক বছরে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে একই সঙ্গে রোদ-ছায়া দেখা গিয়েছে বার বার। এখনও পুরনো মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক যে খুব সহজ, এমনটা নয়। সাম্প্রতিক অতীতে আমেরিকা-বিরোধিতার প্রশ্নে চিনের সঙ্গে অক্ষ এতটাই মজবুত করেছে মস্কো যে তা নয়াদিল্লির পক্ষে সময়ে সময়ে অস্বস্তির হয়ে উঠেছে। তবে একই সঙ্গে মস্কো-বেজিং ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনা সেনার দাপাদাপি কমানোর চেষ্টাও করতে দেখা গিয়েছে সাউথ ব্লককে। মস্কোকে নিয়ে নয়াদিল্লির আরও একটি অস্বস্তির কারণ পাকিস্তান। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে চলতি সফরেও ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা সেরে লাভরভ দু’দিনের সফরে সোজা যাবেন ইসলামাবাদ।
সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরে চিন, আফগানিস্তান প্রশ্নে সরব হয়েছেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “ভারত-চিন সীমান্তে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর প্রক্রিয়ার দিকে আমরা নজর রাখছি। দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী ২৫ ফেব্রুয়ারি টেলিফোন-আলোচনায় জট কাটানোর জন্য যে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন, তাকেও আমরা স্বাগত জানিয়েছি। দু’দেশের বহুস্তরীয় দ্বিপাক্ষিক মেকানিজমের মাধ্যমে ভারত এবং চিন নিজেরা এই সমস্যা সমাধান করে নেওয়ার যে ইচ্ছা দেখিয়েছে, আমরা তাকে সম্মান করি। আশা করব, দ্রুত রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করবে তারা।”
আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়ায় মস্কো মার্চের ১৮ তারিখ যে ত্রিদেশীয় সম্মেলন করেছিল, তাতে আমন্ত্রণ জানায়নি ভারতকে। আমেরিকা, চিন এবং পাকিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে নয়াদিল্লির। জানা গিয়েছে আজ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে লাভরভের বৈঠকে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পাশাপাশি বিস্তারিত কথা হয়েছে আফগানিস্তান নিয়েও। যুদ্ধবিধ্বস্ত কাবুলের পুনর্নিমানে ভারত যে সক্রিয় সহযোগিতা করতে চায়, জয়শঙ্কর সে কথা জানিয়েছেন। সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরে লাভরভ বলেছেন, “আফগানিস্তানের নিষ্পত্তির প্রশ্নে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। অবশ্যই সে দেশের জাতীয় সমন্বয় সাধনে ভারতের যোগ দেওয়া প্রয়োজন।”