ফাইল চিত্র।
মা, আমি ইউক্রেনে। এখানে সত্যিকারের যুদ্ধ লেগেছে। আমার খুব ভয় করছে। —দেশের নেতৃত্বের নির্দেশে ‘লড়তে’ এসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার কিছুক্ষণ আগে হোয়াটসঅ্যাপে মাকে করা এটাই ছিল এক রুশ সেনার শেষ-বার্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে নিহত হন ওই রুশ যুবক। মৃতদেহের কাছ থেকেই উদ্ধার করা হয় তাঁর স্মার্টফোনটি। যেখান থেকে পাওয়া গিয়েছে মায়ের উদ্দেশে লেখা তার এই আতঙ্ক-বার্তা। রাশিয়ার নিশানা থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষও— তা বোঝাতেই হয়তো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ অধিবেশনে ওই নিহত রুশ সেনার এই হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাটি তুলে ধরেন সেখানে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত।
মাকে ওই রুশ সেনা লিখেছিলেন, ‘‘মা আমি ইউক্রেনে। এখানে সত্যিকারের যুদ্ধ লেগেছে। আমার ভীষণ ভয় করছে। একসঙ্গে সব শহরে বোমা বর্ষণ করছি আমরা, এমনকি নিশানা করা হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদেরও। আমাদের বলা হয়েছিল যে ইউক্রেনীয়রা আমাদের স্বাগত জানাবেন। তবে তাঁরা আমাদেরই বাহিনীর যুদ্ধযানের নীচে এসে পড়ছেন, নিজেদের চাকার নীচে ঠেলে দিচ্ছেন, আমাদের পথ আটকানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমাদের ফ্যাসিস্ট বলছেন। মা, এখানে পরিস্থিতি খুব কঠিন।’’
ইউক্রেনীয় বাহিনী সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, ওই যুবককে তাঁর মা জিজ্ঞেস করেছিলেন যে তিনি ঠিক কোথায় আছেন? কারণ শেষ বার অনেক দিন আগে কথা হয়েছিল তাঁদের। ছেলের কাছে তিনি এও জানতে চেয়েছিলেন যে, যেখানে তিনি আছেন, সেই ঠিকানায় কি পার্সেল পাঠানো যাবে? ছেলের তরফে উত্তর এসেছিল, ‘‘ইউক্রেনে আছি মা, ইচ্ছে করছে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ি।’’ তার পরেই সেখানকার পরিস্থিতি বিশদ ভাবে মাকে লিখেছিলেন ওই যুবক।
তবে কথা হলেও মায়ের কাছে আর ফেরা হল না। ছেলের ঠিকানায় পার্সেলটিও আর পৌঁছনো হল না তাঁর মায়ের।