পিয়োতর পাভলেনস্কি।
মস্কোর রেড স্কোয়ারে পাথর বাঁধানো রাস্তায় বসে নিজের যৌনাঙ্গে পেরেক গেঁথেছিলেন পিয়োতর পাভলেনস্কি। একদা গণ-বিপ্লবের আঁতুড়ঘর রাশিয়া ক্রমে ‘পুলিশ স্টেট’ হয়ে উঠেছে— এই অভিযোগে পরের বছর ২০১৪-য় মস্কোরই এক হাসপাতালের ছাদে নগ্ন হয়ে নিজের কান কেটে ফেলেছিলেন তিনি। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া বছর পঁয়ত্রিশের সেই ‘প্রতিবাদী শিল্পী’-ই এখন মাথাব্যথা প্যারিসের।
এ বার পাভলেনস্কির হাতিয়ার ‘পলিটিক্যাল পর্ন প্ল্যাটফর্ম’! নিশানায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁর ‘প্রিয়’ প্যারিসের মেয়র পদপ্রার্থী বেঞ্জামিন গ্রাইভক্স। সম্প্রতি একটি যৌন কুকীর্তি ফাঁস করে দিয়ে যাঁর ভোটে দাঁড়ানোই আটকে দিয়েছেন ২০১৭ থেকে ফ্রান্সে আশ্রয় নেওয়া এই প্রতিবাদী শিল্পী। শনিবার প্যাভলেনস্কির ফরাসি বান্ধবী আলেক্সান্দ্রা দ্য তাদেয়োকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এখন তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি, আলেক্সান্দ্রাকে বছর দুয়েক আগে পাঠানো বেঞ্জামিনের ওই ভিডিয়োও খতিয়ে দেখছে ফ্রান্সের পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়ার আগে পাভলেনস্কিকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘তিন সন্তানের বাবা বিয়াল্লিশ বছরের ওই লোকটা মুখে যতই পারিবারিক মূল্যবোধের কথা বলুক, আদতে একটা পাক্কা শয়তান। মুখোশটা খুলতেই হত।’’ গত সপ্তাহে অনলাইনে ফাঁস হয়ে যাওয়া ওই ভিডিয়োতে বেঞ্জামিনকে স্বমেহন করতে দেখা গিয়েছিল। পাভলেনস্কি দাবি করেছিলেন, তাঁর বান্ধবীকে পাঠানো এমন আরও অনেক ভিডিয়ো এবং অশ্লীল টেক্সট মেসেজ তিনি ফাঁস করতে চলেছেন তাঁর সদ্য তৈরি ‘পলিটিক্যাল পর্ন প্ল্যাটফর্মে’।
মাসখানেকও বাকি নেই প্যারিস পুরভোটের। তার আগে বেঞ্জামিনের এই যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে ঝড় ফ্রান্সে। এমন কারণে প্রার্থীপদই বাতিল হয়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম। বেঞ্জামিনের আইনজীবী যদিও বলছেন, ‘‘ভুয়ো শিল্পীর মুখে নীতিকথা মানায় না।’’ প্রতিবাদ করতে গিয়ে পাভলেনস্কি বারবার অপরাধে জড়াচ্ছেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে। কেউ বলছেন, সবটাই আসলে আত্মপ্রচার। একইসঙ্গে পাভলেনস্কির বান্ধবীর ‘উদ্দেশ্য’ নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। ঘটনাটিকে অনেকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলেও মনে করছেন।