পুতিন এবং জেলেনস্কি। ফাইল চিত্র।
মারিয়ুপোল দখলের পর এ বার ভ্লাদিমির পুতিনের নজর পূর্ব ইউক্রেনে। তাঁর নির্দেশে সেখানকার ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে (যাদের একত্রে ডনবাস বলা হয়) ইতিমধ্যেই হানাদারির অভিঘাত বাড়িয়েছে রুশ সেনা। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘‘পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের উপরেই নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যৎ।’’
পাশাপাশি আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির উদ্দেশে জেলেনস্কির সতর্কবার্তা, ‘‘ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা সূচনা মাত্র। ভ্লাদিমির পুতিন শেষ পর্যন্ত তাঁর সেনাদের এ বার পশ্চিমের অন্য দেশগুলি দখলের নির্দেশ দেবেন। বস্তুত, ইউক্রেনের পশ্চিমের পড়শি দেশ মলডোভার অংশ ট্রান্সনিস্ট্রিয়া নব্বইয়ের দশক থেকেই রাশিয়ার দখলে। মারিয়ুপোল দখলের পর রুশ জেনারেল রুস্তম মিনেকায়েভ জানিয়েছেন, দক্ষিণ ইউক্রেনে রুশ নিয়ন্ত্রণ কায়েম হলে ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার সঙ্গে মস্কোর যোগাযোগের সুবিধা হবে।
যুদ্ধের ৫৯ তম দিনেও রাজধানী কিভ-সব ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকা রুশ সেনার দখলমুক্ত। এমনকি, তাদের দখল করা বেশ কিছু এলাকা পুনর্দখল করেছে জেলেনস্কির ফৌজ। এই পরিস্থিতিতে কিভ-মুখী অভিযানের গতি কমিয়ে রুশ সীমান্ত লাগোয়া ডনবাস অঞ্চল দখলকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন পুতিন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ডনবাসকে ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন পুতিন। তার পরের দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের কথা ঘোষণা করেন তিনি।
ওই এলাকায় বাসিন্দাদের বড় অংশ রুশভাষী এবং মস্কোর প্রতি অনুগত। রুশ-পন্থী বেশ কয়েকটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীও ডনবাস এলাকায় সক্রিয়। তাই হিসেব কষেই পুতিনের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। কিছু দিন আগেই রুশ সেনার ‘সবচেয়ে দক্ষ এবং নৃশংস’ আধিকারিক হিসেবে পরিচিত জেনারেল আলেকজান্দার দর্নিকভকে ডনবাস দখলের দায়িত্ব দিয়েছেন পুতিন। অতীতে সিরিয়ার যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনীর জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন দর্নিকভ।
এরই মধ্যে ডনবাস এলাকায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে ৮০ কোটি ডলারের (প্রায় ৬,১১৭ কোটি টাকা) সামরিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছে ৭২টি এম-৭৭৭ হাউইৎজার কামান। এবং তার ১ লক্ষ ৩৪ হাজার গোলা। ১৫৫ মিলিমিটারের এই অত্যাধুনিক কামান সম্প্রতি ভারত কিনেছে। এ ছাড়া ‘ট্যাকটিক্যাল মিলিটারি ভেহিকল্’ (হাম্ভি) এবং ‘ফিনিক্স ঘোস্ট’ ড্রোন রয়েছে এই তালিকায়। ইউক্রেন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই বানানো হয়েছে ওই যুদ্ধ-ড্রোন।