রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলায় বিপর্যস্ত ইউক্রেন। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
নববর্ষের আগে অন্ধকারে ইউক্রেন। রাজধানী কিভ-সহ দেশের অধিকাংশ এলাকাই ‘ব্ল্যাক আউট’-এর কবলে। ‘সৌজন্যে’ রুশ সেনার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের হানা।
শুক্রবার, যুদ্ধের ৩১০তম দিনেও রাজধানী কিভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে চলছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের ধারাবাহিক হামলা। ইউক্রেন সেনার একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার রাত থেকে কয়েক’শ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রুশ ফৌজ। প্রবল শীত আর তুষারপাতের মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কিভ-সহ বিভিন্ন শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, বহু বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস হওয়ায় দেশের অধিকাংশ এলাকাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বলেন, ‘‘রাজধানী কিভ এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের পাশাপাশি, লভিভ, ওডেসা, খেরসন, ভিনিটসিয়া এবং ট্রান্সকারপাথিয়া এলাকায় জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে গেলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন।’’
রাজধানী কিভের পাশাপাশি ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর জ়াপোরিজিয়া এবং দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ বাহিনী ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের দাবি। ইউক্রেনের দাবি, এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির তরফে যুদ্ধ থামানোর জন্য যে ১০ দফার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, রাশিয়ার বিদেশ সচিব সের্গেই লাভরভ তা নাকচ করেছেন।
প্রসঙ্গত, জ়েলেনস্কি কয়েক মাস আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, শীতের মরসুমে নতুন করে বিধ্বংসী হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। দেশবাসীর উদ্দেশে এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিদ্যুতের সরবরাহ কম থাকায় আমাদের সকলকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’’ পাশাপাশি, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় গৃহহীন ইউক্রেনীয় নাগরিকদের জন্য আশ্রয় শিবির খোলার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।
এর পর চলতি মাসে ইউক্রেনের তরফে দাবি করা হয়, শীতের মধ্যেই কিভ দখলের লক্ষ্যে নতুন প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রায় ২ লক্ষ রুশ ফৌজ। সেই বাহিনীতে রয়েছে বাছাই করা বেশ কিছু গোলন্দাজ, ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া ব্যাটেলিয়ন। ইউক্রেন সেনার জেনারেল ভ্যালেরি জ়ালুঝনি একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে এই ‘তথ্য’ দেন। কিন্তু এখনও রুশ ফৌজের তরফে সেই ‘ফাইনাল অ্যাসল্ট’ শুরু হয়নি। বরং সরাসরি সামরিক অভিযানে ইউক্রেনকে ধরাশায়ী করতে না পেরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে কৌশল নিয়েছেন, তাতে প্রবল ঠান্ডার মধ্যে জীবনসঙ্কটে জ়েলেনস্কির দেশের অন্তত ১ কোটি মানুষ।