ইউক্রেন অভিযানের দায়িত্বে রদবদল পুতিনের। ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় আড়াই মাস যুদ্ধ চালিয়েও ইউক্রেন অভিযানে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি রুশ ফৌজ। দক্ষিণের মারিয়ুপোল শহর থেকে পূর্বের ডনবাস অঞ্চল পর্যন্ত এখনও প্রতিরোধ চালাচ্ছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুগত বাহিনী। এমনকি, রাজধানী কিভের অদূরে পৌঁছে পিছু হটতে হয়েছে রাশিয়ার সেনাকে।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের ‘গোপনীয় দায়িত্ব’ থেকে রুশ গুপ্তচর সংস্থা এফএসবি (ফেডেরাল সিকিউরিটি সার্ভিস)-কে অব্যাহতি দিলেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার রাতে ইউক্রেন যুদ্ধের ভার তুলে দেওয়া হয়েছে রুশ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিএসইউ-র হাতে।
সোভিয়েত জমানার গুপ্তচর সংগঠন কেজিবি-র উত্তরসূরি এফএসবি। একদা পুতিন ছিলেন সংগঠনের প্রধানের দায়িত্বে। ইউক্রেন যুদ্ধে তাঁর পরামর্শদাতাদের অন্যতম ছিলেন দুই এফএসবি কর্তা, নিকোলাই পাতরুশেভ এবং আলেকজান্ডার বর্তনিকভ।
পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানাচ্ছে, ৭৭ দিনের ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ সেনার মোট ১২ জন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এবং মেজর জেনারেল স্তরের সেনা আধিকারিক নিহত হয়েছেন। প্রতি ক্ষেত্রেই হামলার আগাম আঁচ দিতে ব্যর্থ হয়েছে এফএসবি। তা ছাড়া, রুশ নজরদারি এড়িয়ে পোল্যান্ড এবং মলডোভা সীমান্ত দিয়ে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম এবং রসদ আমদানি করে চলেছে ইউক্রেন সেনা। নেটো সামরিক সহায়তায় ‘পথ’ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রেও জেলেনস্কি বাহিনীর গতিবিধির হদিশ দিতে পারেনি রুশ গুপ্তচর সংস্থা।
রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউ (‘গ্রু’ নামেই যার পরিচিতি) তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি নাশকতা এবং গুপ্তহত্যাতেও পারদর্শী। ২০১৮ সালে ব্রিটেনে এক প্রাক্তন কেজিবি এজেন্টকে খুন করেছিল এই বাহিনী। ২০১৪-য় চেক প্রজাতন্ত্রে একটি সামরিক অস্ত্রভান্ডারে বিস্ফোরণের ঘটনাতেও উঠে এসেছিল জিআরইউর নাম।
পুতিন-ঘনিষ্ঠ রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্যালেরি জেরাসিমভের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জিআরইউ। পুতিনের সামরিক অভিযানের পিছনে জেরাসিমভই নাকি অন্যতম মগজাস্ত্র। ইউক্রেনে হামলার আগে বেলারুশে সামরিক মহড়ার তত্ত্বাবধানেও ছিলেন তিনি।