তাজমহল। ফাইল চিত্র।
মুঘল সম্রাট শাহজহানের তৈরি তাজমহলও এ বার বিজেপির নিশানায়। ইলাহাবাদ হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে দলের অযোধ্যা জেলার ‘মিডিয়া ইনচার্জ’ রজনীশ সিংহ ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর তত্ত্বাবধানে তাজমহলের ‘আসল ইতিহাস’ অনুসন্ধানের দাবি জানিয়েছেন। আদালত সেই মামলা শুনানির আবেদন গ্রহণ করেছে।
রজনীশের আইনজীবী রুদ্রবিক্রম সিংহ বুধবার বলেন, ‘‘হিন্দু সন্তেরা মনে করেন ‘তেজো মহালয়’ নামে একটি শিব মন্দিরের উপরে ওই সৌধ (তাজমহল) গড়া হয়েছে। আমরা চাই এএসআই-এর পুরাতত্ত্ববিদদের তত্ত্বাবধানে তাজমহল চত্বরে অনুসন্ধান চালিয়ে সত্য উদ্ঘাটন করা হোক।’’ তাজমহলের অন্দরে দীর্ঘ দিন ধরে ২২টি ঘর বন্ধ রয়েছে দাবি করে, এএসআই-এর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সেগুলি খোলারও দাবি জানান তিনি।
১৯৯২ সালে অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার সময়েই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা স্লোগান দিয়ে ঘোষণা করেছিল, ‘ইয়ে তো স্রিফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়’। গত সপ্তাহেই আদালতের নির্দেশে বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদে পুরাতত্ত্ব বিশারদদের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে ভিডিয়োগ্রাফি এবং পর্যবেক্ষণের কাজ। মথুরার কৃষ্ণ জন্মভূমিতে ১৬৬৯-৭০ সালে আওরঙ্গজেবের আমলে গড়ে তোলা শাহি মসজিদ ইদগাহ সরানোর দাবিতেও মামলা চলছে আদালতে। এ বার সেই তালিকায় এল উত্তরপ্রদেশের তথা ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঐতিহাসিক সৌধের নাম।
বিজেপি-বিরোধীদের দাবি, ১৯৯১ সালের ধর্মস্থান সংক্রান্ত আইনে বলা রয়েছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতার দিন যেখানে যে ধর্মস্থান রয়েছে, সেখানে তা থাকবে। বাবরি ধ্বংসের এক বছর আগে তৈরি ওই আইন মানলে কাশী বা মথুরা মন্দিরের লাগোয়া মসজিদ সরানোর দাবি বেআইনি। তাজমহলের ‘সত্য’ উদ্ঘাটনের জন্য হিন্দুত্ববাদীদের দাবিরও কোনও আইনি যৌক্তিকতা নেই।