মস্কোয় এক বিক্ষোভকারীকে আটক পুলিশের। ছবি: রয়টার্স
ইউক্রেনে নতুন করে সেনা পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিন লক্ষ অতিরিক্ত বাহিনীর আংশিক সমাবেশের কথাও ঘোষণা করেছিলেন তিনি। রাশিয়ায় সেনা সমাবেশের ওই ঘোষণা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম। আর এই ঘোষণা ঘিরে বিক্ষোভ দানা বাঁধছে রাশিয়ার বিভিন্ন এলাকায়। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সেই দেশের বহু শহর। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আটক করা হয়েছে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে।
ওভিডি ইনফো নামে রাশিয়ার একটি মানবাধিকার সংগঠনের সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই দেশের অন্তত ৩৩টি শহরে পুতিনের অতিরিক্ত বাহিনীর আংশিক সমাবেশের ঘোষণার প্রতিবাদে জমায়েত করে চলছে বিক্ষোভ। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আটক করা হয়েছে দুই হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে। রাশিয়ার আইন অনুযায়ী, সেখানে অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করা নিষিদ্ধ। কিন্তু এখন সেই আইন উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ চলছে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে। ক্রমশই বড় আকার ধারণ করছে সেই বিক্ষোভ। তাতে যোগ দিয়েছেন পড়ুয়ারাও। বিক্ষোভের ঢেউ লেগেছে রাজধানী মস্কোতেও।
একইসঙ্গে নজরে এসেছে অন্য ছবিও। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, সেনায় যোগ দেওয়ার জন্য যাঁরা সই করেছিলেন তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাসে চড়িয়ে। যিনি যুদ্ধে যাচ্ছেন তাঁকে বিদায় জানাতে গিয়ে কাঁদছেন তাঁর আত্মীয়-পরিজনরা। সমাজমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভিডিয়োটি সাইবেরিয়ার ইয়াকুতিয়া অঞ্চলের। সেনার কোটা পূরণ করতে মাঝরাতে এক একটি জায়গায় হানা দিচ্ছে রুশ সেনা। অ্যান্টোনিয়া নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘ওরা (রুশ সেনা) আমার ৪০ বছরের ছেলেকে নিয়ে গিয়েছে যুদ্ধে। আমাদের গ্রাম থেকে যাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁদের সকলের বয়স চল্লিশের উপরে। এ নিয়ে গোটা গ্রাম এখন সন্ত্রস্ত।’’
এই সময়ে অনেক রুশ নাগরিক দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে। জর্জিয়া এবং ফিনল্যান্ড সীমান্তে রাশিয়ানদের ভিড় বেড়েছে। পাশাপাশি রাশিয়া থেকে তুরস্ক, সার্বিয়া ইত্যাদি নানা দেশে যাওয়া বিমানের টিকিট বিক্রির সংখ্যাও বেড়েছে। পাশাপাশি, রাশিয়ার বহু সীমান্তও এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এস্তোনিয়াল লাটভিয়া এবং লিথুয়নিয়ার মতো বাল্টিক অঞ্চলের দেশগুলি রাশিয়া থেকে পালিয়ে যাওয়া নাগরিকদের আশ্রয় দেবে না বলেই ঘোষণা করেছে।