রকেট হামলায় তছনছ পার্কের প্রাচীর। ক্ষয়ক্ষতি দেখছে সেনা। বুধবার বাগদাদে। এএফপি
গত কালই ওয়াশিংটন ঘোষণা করেছে, আফগানিস্তান ও ইরাকের মাটি থেকে আমেরিকার সেনাবাহিনী কমানো হবে। এর পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটল না। কাল রাতের অন্ধকারে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে আমেরিকার দূতাবাস নিশানা করে রকেট হামলা চালাল জঙ্গিরা।
ইরাকি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাগদাদের কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত গ্রিন জ়োনে চারটি রকেট হামলা চলেছে। ওই এলাকায় আমেরিকা ছাড়াও আরও চারটি রাষ্ট্রের দূতাবাস রয়েছে। এ ছাড়াও বাগদাদের অন্য কিছু এলাকায় পরপর তিনটি রকেট হামলা ঘটে। হামলায় এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন পাঁচ বাসিন্দা। মোট সাতটি রকেটই পূর্ব বাগদাদের একটি নির্দিষ্ট এলাকা থেকে ছোড়া হয়েছে বলে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে ইরাকি সেনা।
বাগদাদের স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। তার পরেই গোলাগুলি চলার আওয়াজ। লাল আগুনে ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যায়। যা থেকে তাঁদের অনুমান, আমেরিকার দূতাবাসের সি-র্যাম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি সক্রিয় ছিল। তাই সেটি হয়তো বড় ক্ষতি হওয়া রুখে দিয়েছে। সি-র্যাম (সি-আরএএম বা কাউন্টার রকেট, আর্টিলারি অ্যান্ড মর্টার) হল এমন একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা শত্রুর রকেটকে চিহ্নিত করে, তা লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করার আগেই ধ্বংস করে দেয়।
গত এক বছরে ইরাকে দূতাবাস, সেনাবাহিনী বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে অন্তত ৯০টি জঙ্গি-হামলা চলেছে। কাল রাতের ঘটনায় ইরানের মদতপুষ্ট কোনও জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে বলে সন্দেহ। আমেরিকা একাধিক বার এ ধরনের হামলায় ‘কাতায়েব হেজবুল্লাহ’ গোষ্ঠীর নাম তুলেছে।
গত কাল ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার ইরাক-আফগানিস্তানে সেনা কমানোর সিদ্ধান্তের কথা জানাতেই, ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান, দুই পক্ষই আপত্তি প্রকাশ করে। জানায়, সেনা কমানো হলে ‘বড় ভুল’ হবে। ২০১৪ সাল থেকে ইসলামিক স্টেটকে খতম করতে আমেরিকান সেনাবাহিনী নিযুক্ত রয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়। কিন্তু এ নিয়ে ইরাকের পূর্ব দিকের পড়শি দেশ ইরানের আপত্তি রয়েছে। তাদের দাবি, পশ্চিম এশিয়া থেকে সেনা প্রত্যাখ্যান করতে হবে আমেরিকাকে। এই আপত্তি আরও জোরদার হয় জানুয়ারি মাসে। আমেরিকার ড্রোন হামলায় ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেমানি নিহত হন। ট্রাম্প সরকারের বক্তব্য, আফগানিস্তান, ইরাকের মাটিতে ৬৯০০ আমেরিকান সেনা নিহত হয়েছেন। এই মৃত্যুমিছিল থামাতেই সেনা কমানোর সিদ্ধান্ত। গত কালের ঘোষণা অনুযায়ী, ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক পাঁচ দিন আগে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে দুই দেশ থেকে সেনা কমানো হবে। আফগানিস্তানে ৫০০০ আমেরিকান সেনা নিযুক্ত রয়েছে। সেটা কমিয়ে ২৫০০ হবে। ইরাকে ৩০০০ থেকে কমিয়ে ২৫০০ হবে।