অবৈধ ভাবে ব্রিটেনে ঢুকলেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে— জানিয়ে দিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। বুধবার ব্রিটেনের নতুন অনুপ্রবেশ বিলের ঘোষণা করেছেন ঋষি। একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, ব্রিটেনে অবৈধ ভাবে ঢুকলে তাঁদের তল্পিতল্পা-সমেত দেশের বাইরে পাঠাতে সরকারের ঠিক এক সপ্তাহ লাগবে।
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ঋষির কাছ থেকে ব্রিটেনের যে সমস্যাগুলির সমাধানের চাপ ছিল, তার মধ্যে অন্যতম অনুপ্রবেশের সমস্যা। ব্রিটেনে প্রতি বছর ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ অন্য দেশ থেকে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করেন।অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই অনুপ্রবেশকারীরা ব্রিটেনের সীমান্তে প্রবেশ করেন ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে। ছোট ছোট নৌকায় চ্যানেল পেরিয়ে আসা এই অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা ৬০ শতাংশ বেড়েছে। এই সমস্যার সমাধানেই ব্রিটেনের আইনসভায় নতুন অনুপ্রবেশ বিল এনেছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি।
নতুন বিলে বলা হয়েছে, ‘‘যাঁরা অবৈধ ভাবে ব্রিটেনের সীমান্তে প্রবেশ করবেন, তাঁদের প্রথমে আটক করা হবে। তার পর নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাবে ব্রিটেন প্রশাসন। নয়তো পাঠিয়ে দেওয়া হবে তৃতীয় কোনও দেশে। দু’ক্ষেত্রেই তাঁরা ভবিষ্যতে আমেরিকায় বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে প্রবেশের অধিকার হারাবেন।’’ ঋষি এই অনুপ্রবেশকারীদের উদ্দেশে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘যদি আপনারা আইন না মেনে এ দেশে প্রবেশ করে থাকেন, তবে এ দেশের আশ্রয়ও দাবি করতে পারেন না।’’
এই অনুপ্রবেশ বিলে প্রস্তাবিত মূল ৪টি পদক্ষেপে কথা নিজেদের টুইটার অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি। তিনি লিখেছেন, প্রথমত, আটক করে ১ সপ্তাহের মধ্যে ফেরত পাঠানো হবে। দ্বিতীয়ত, ব্রিটেনের আধুনিক কিছু সুবিধা পাবেন না এঁরা। তৃতীয়ত, ব্রিটেনে আর কখনওই আশ্রয় চাইতে পারবেন না এঁরা। চতুর্থত, এঁদের পূর্ব আফ্রিকার রাওয়ান্ডার মতো কোনও নিরাপদ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং তার বিরোধিতাও করতে পারবেন না তাঁরা। সোজা কথায় ব্রিটেন এই অনুপ্রবেশকারীদের কোনও সুবিধাই দেবে না। কারণ নতুন বিলের যুক্তি হল, এঁদের সুবিধা দিতে গিয়ে আসলে যাঁদের সুবিধা পাওয়ার হকদার, তাঁরা বঞ্চিত থেকে যাচ্ছেন।
নতুন বিল এনে ঋষি জানিয়েছেন, এ ভাবেই আমাদের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেবে ব্রিটেন প্রশাসন। বন্ধ হবে পাচারের মতো বেআইনি কাজও। যদিও বিরোধী দল এবং মানবাধিকার কর্মীরা ঋষির বিলের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘‘প্রথমত, এই বিলকে বাস্তবায়িত করা যাবে না। আগে চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয়ত, এই বিলে অকারণেই শরণার্থীদের বলি দেওয়া হচ্ছে। কারণ তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই।’’