ইরানের রাজধানী লক্ষ্য করে ইজ়রায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
এ বার ইরানে সরাসরি হামলা শুরু করল ইজ়রায়েল। রাজধানী তেহরানে শনিবার সকাল থেকে আকাশপথে একাধিক হামলা করা হয়েছে। ইজ়রায়েলি সংবাদমাধ্যমের দাবি, একাধিক যুদ্ধবিমান হামলা চালিয়েছে ইরানে। এই হামলার দায় স্বীকার করে ইজ়রায়েল জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে ইরানের লাগাতার হামলার জবাব দিতে শুরু করেছে তারা। তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ইরানের সামরিক ঘাঁটি। এ ছাড়া, ইরাক এবং সিরিয়াতেও একাধিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তেল আভিভ।
শনিবার ইজ়রায়েলি ডিফেন্স ফোর্স জানিয়েছে, ইরানের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘নির্দিষ্ট’ কিছু হামলা চালাচ্ছে তারা। শনিবার ভোর রাত থেকে আকাশপথে অন্তত দু’টি হামলা হয়েছে তেহরান এবং সংলগ্ন এলাকায়। ইরানে ইজ়রায়েলের এই সরাসরি হামলা পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধের ঝাঁজ আরও বাড়িয়ে দিল। ইজ়রায়েলি সেনা একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘ইরান থেকে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে মাসের পর মাস ধরে অনবরত যে আক্রমণ আসছে, তার জবাবে ইজ়রায়েলের সেনাবাহিনী এখন ইরানের কিছু সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নির্দিষ্ট হামলা চালাচ্ছে।’’
গত ১ অক্টোবর ইজ়রায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান। অন্তত ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল তেল আভিভকে লক্ষ্য করে। সেই সময়ে লেবাননে ‘গ্রাউন্ড অপারেশন’ শুরু করেছিল ইজ়রায়েলি সেনা। তারই জবাবে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করে ইজ়রায়েলের উপর। যদিও ইজ়রায়েলের দাবি ছিল, আকাশপথে সফল ভাবে তারা ওই হামলার মোকাবিলা করেছে। সেই প্রথম বার পশ্চিম এশিয়ায় কোনও রাষ্ট্রশক্তি সরাসরি ইজ়রায়েলকে নিশানা করেছিল। এ বার তাই সরাসরি ইরানে প্রত্যাঘাত শুরু করে দিল ইজ়রায়েল। পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধের পরিধি এ ভাবে ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
২০২৩ সালর ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। তার পরেই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই থেকে যুদ্ধ চলছে। একে একে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজ়বুল্লা এবং ইয়েমেনের বিদ্রোহী হুথি গোষ্ঠী ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির নেপথ্যে ইরানের মদত থাকলেও এত দিন সরাসরি যুদ্ধ করেনি তেহরান। অক্টোবরের শুরুতে লেবাননে ইজ়রায়েলি হামলার পর তেল আভিভে প্রত্যাঘাত করে তারা সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এ বার পাল্টা প্রত্যাঘাত আসতে শুরু করেছে ইজ়রায়েল থেকেও।