আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে এগিয়ে এসেছিল ভারত। ছবি: রয়টার্স।
আফগানিস্তানে তালিবান দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠনের পরে অনেক দেশই সেখানে ত্রাণ ও অনুদানের বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে প্রবল খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি। চিন ও তুরস্কের মতো কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই সেখানে ত্রাণ পাঠানো শুরু করেছে। পিছিয়ে নেই আর এক পড়শি দেশ ভারতও। তালিবান সরকারকে নয়াদিল্লি এখনও পর্যন্ত স্বীকৃতি না দিলেও আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে এগিয়ে এসেছিল ভারত। কিন্তু অভিযোগ, পাকিস্তান সরকারের গড়িমসিতে ভারতের পাঠানো ত্রাণ আদৌ আফগানিস্তানে পৌঁছবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আফগানিস্তানে পাঠানোর জন্য পাকিস্তানের রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল দিয়েছিল ভারত। এত বিপুল পরিমাণ গম আকাশ পথে পাঠানোয় সমস্যা হবে বলে স্থলপথে ট্রাকে করে সেগুলি পাকিস্তানের ভিতর দিয়ে আফগানিস্তানে পৌঁছনোর কথা ভাবা হয়েছিল। যার জন্য প্রয়োজন অন্তত ৫ হাজার ট্রাকের। গত মাসেই ভারত চিঠি দিয়ে পাক সরকারের অনুমতি চায় যাতে ট্রাকগুলি পাকিস্তানে ঢুকতে পারে। সেই প্রস্তাবে সরাসরি না করেনি পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের অভিযোগ, তাদের দেশের ভিতর দিয়ে সেই ট্রাকগুলি যাওয়ার অনুমতিও এখনও পর্যন্ত দিয়ে উঠতে পারেনি ইসলামাবাদ। ফলে আফগানিস্তানে ত্রাণ পৌঁছনোর বিষয়টি পুরোপুরি আটকে রয়েছে।
একই সঙ্গে আফগানিস্তান প্রসঙ্গে ভারতের ডাকা এক আলোচনায় তিনি অংশ নেবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মইদ ইউসুফ। আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের থেকে পড়শি দেশগুলি আদৌ সুরক্ষিত কি না, তা নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ১০-১১ নভেম্বর একটি সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। পাকিস্তানের পাশাপাশি, চিন, তুরস্ক, ইরান, উজ়বেকিস্তান, তাজিকিস্তানের মতো দেশকেও বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ভারত। গত কাল ইসলামাবাদে ভারতকে বিঁধে মইদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘যারা সমস্যা তৈরি করে তারা কখনও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না।’’ গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় যাবতীয় গোলমাল ও জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য ভারতকেই দায়ী করেছেন মইদ।