—প্রতীকী ছবি।
মায়ানমারে জুন্টা সরকারের সেনার উপর বড় হামলা চালাল বিদ্রোহী জোট। বাংলাদেশের কক্সবাজার লাগোয়া মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের অধিকাংশ এলাকা দখলের পাশাপাশি মঙ্গলবার জুন্টা সরাকারের বাহিনীর অন্তত ৮০ জন অফিসার এবং জওয়ানকে হত্যা করেছে তারা। প্রাণ বাঁচাতে বেশ কিছু সেনা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে বলে জানা গিয়েছে।
বিদ্রোহী তিন গোষ্ঠীর জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স, গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ) এবং রাখাইন প্রদেশে সক্রিয় সশস্ত্র জনজাতি বাহিনী আরাকান আর্মি শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া হামলায় অংশ নেয় বলে মায়ানমারের নির্বাসিত গণতন্ত্রপন্থী সরকারের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর।
বিদ্রোহী আরাকান আর্মি এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া লড়াইয়ে নিহত সেনাদের পাশাপাশি বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করেছে তারা। দখল করেছে রামরি দ্বীপের মূল শহর এবং আশপাশের সব গ্রামগুলি। প্রসঙ্গত, মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ নভেম্বর থেকে সে দেশের সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন ১০২৭’।
পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয়, আরাকান আর্মি, ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং ‘চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স’ (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ)-এর মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিও। জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। বিদ্রোহীদের হামলার জেরে ইতিমধ্যেই সে দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকা সরকারি সেনার হাতছাড়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সে দেশের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র সমর্থক পিডিএফের ‘সক্রিয়তা’ জুন্টা সরকারের সমস্যা আরও বাড়িয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করেই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিল মায়ানমার সেনা। তিন বছরের সেনা জুন্টার সরকার এই প্রথম এত বড় সঙ্কটের মুখোমুখি হল।