রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে।
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। এক মাস আগে তাঁকে দ্বীপরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন দেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। সম্প্রতি তিনি পদত্যাগ করায় রনিল অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ বার তাঁকেই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করা হল।
বুধবার ছিল শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নতুন নিয়ম জারি হয়। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এবং তখনকার প্রধানমন্ত্রী রানিলের সরকারই জানিয়ে দেয়, আগের মতো আম নাগরিকদের সমর্থনে (পপুলার ভোট) নয়, দেশের পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটেই ২০ জুলাই নির্বাচিত হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। সেই নিয়ম মেনেই জয়ী হলেন রনিল।
শ্রীলঙ্কার ইউনাউটেড ন্যাশনাল পার্টির সদস্য ৭৩ বছরের রনিল। ২০২০ সালে শ্রীলঙ্কার সাধারণ নির্বাচনে জিতে মাহিন্দা রাজাপক্ষে ক্ষমতা দখল করার আগে তিনিই দ্বীপরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। শ্রীলঙ্কার ছ’বারের প্রধানমন্ত্রী তিনি।
তবে রনিল যে এই প্রেসিডেন্ট ভোটে জিততে চলেছেন, তা একরকম অনুমান করা গিয়েছিল। ২২৫ সদস্যের শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টে রাজাপক্ষের দল এসএলপিপি-র ১০০ জন সদস্যের অনেকেই প্রকাশ্যে রনিলকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। বৃহত্তম তামিল দল টিএনএ-র ১০ সদস্যের সমর্থনও তাঁর পাশে ছিল। এই পরিস্থিতিতে অন্য ছোট দল এবং ৪৫ জন নির্দল সদস্যের সমর্থন নির্ণায়ক হবে বলে মনে করছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বুধবারের ভোটে রনিলের জয়ের পর মনে করা হচ্ছে, নির্দলের সমর্থন রনিলের পক্ষে গিয়েছে।
গত এপ্রিল মাস থেকে চরম অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় ক্রমশই ক্ষোভ বাড়ছিল রাজাপক্ষেদের বিরুদ্ধে। সাধারণ মানুষ এই সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামেন। নতুন সরকার গঠনের দাবিও জানান। এর মধ্যেই গত মাসের ১২ মে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদে আসেন রনিল। তার এক মাসের মধ্যেই অবশ্য তাঁর দায়িত্ব বদল করা হল।
উল্লেখ্য, পলাতক গোতাবায়া পদ ছেড়ে যাওয়ায় প্রেসিডেন্টের কুর্সি দখলের লড়াইয়ে রানিল ছাড়া ছিলেন আরও তিন জন— পার্লামেন্টের বিরোধী দলনেতা তথা সমগি জন বলবেগয়া (এসজেবি)-র প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান সাজিথ প্রেমদাসা, প্রবীণ সাংবাদিক তথা রাজাপক্ষের দল শ্রীলঙ্কা পড়ুজনা পেরমুনা (এসএলপিপি)-র পার্লামেন্ট সদস্য ডলাস অলহাপেরুমনা এবং সিংহলী জাতীয়তাবাদী বামপন্থী দল জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি)-র নেতা আনুরা কুমারা দিশানায়েকে।