রন ডি ফ্রাঞ্চেসকো
বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের সাউথ টাওয়ারের ৮৪তলায় ছিল তাঁর অফিস। সেই দিনও অফিসে ছিলেন তিনি। বিশ বছর পরেও ৯/১১-র আতঙ্ক ফিরে ফিরে আসে, সংবাদমাধ্যমকে জানালেন আকাশচুম্বী বাড়ি থেকে বেঁচে ফেরা শেষ ব্যক্তি— রন ডি ফ্রাঞ্চেসকো।
আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতোই ছিল দিনের শুরুটা। ভোর ৬টা ৫০-এর মধ্যে অফিসে ঢুকে গিয়েছিলেন রন। ঠিক তার ঘণ্টা দুয়েক পরেই জঙ্গি-হামলা। জঙ্গিদের ছিনতাই করা বিমান আছড়ে পড়ল সে সময়ে বিশ্বের সব থেকে উঁচু বাড়িতে। ৮৪তলার উপরে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র চার জন প্রাণে বেঁচেছিলেন। ফ্রাঞ্চেসকো তাঁর মধ্যে এক জন।
রন জানান, প্রথমে নর্থ টাওয়ারে হামলা হয়। তাঁরা অবশ্য সন্ত্রাস-হামলা বুঝতে পারেননি। বেরোতে যাবেন, সে সময়ে তাঁদের টাওয়ারে হামলা। মাথার উপর হুড়মুড়িয়ে নেমে আসে ছাদ। নামতে গিয়ে দেখেন, ৭৭ থেকে ৮৫ তলার মাঝখানে বিমান ধাক্কা মেরেছে, নামার উপায় নেই। ছাদের দিকে ছুটতে শুরু করেন। ৯১ তলা পর্যন্ত উঠে দেখেন সিঁড়ি তালাবন্ধ!
‘‘এর পর?’’ সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে রন জানান, একটা দেওয়ালের দিকে এগোতেই আড়ালে দেখেন সিঁড়ি নেমে গিয়েছে। অনেকটা নামার পর দেখেন দমকল কর্মীরা। রন বলেন, ‘‘এর পরই গোটা বাড়িটা নেমে আসতে থাকে। ডান দিকে তাকিয়ে দেখি আগুনের গোলা এগিয়ে আসছে...আর মনে নেই। তিন দিন পরে হাসপাতালে জ্ঞান ফিরেছিল। সারা গায়ে পোড়া। চোখের ভিতরেই গলে গিয়েছিল কনট্যাক্ট লেন্স।’’
কানাডার নাগরিক রন এক বছরের মধ্যে আমেরিকা ছেড়ে দেশে ফিরে যান। বললেন, ‘‘স্ত্রী-সন্তানদের মুখ চেয়ে, এই আতঙ্কের স্মৃতি নিয়ে আর আমেরিকায় থাকতে পারিনি।’’