—ফাইল চিত্র
স্বশাসিত হংকংয়ে নিজেদের রাশ টেনে ধরতে পার্লামেন্টে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইনের একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছে চিন। তার প্রতিবাদে রবিবার বিক্ষোভে ফেটে পড়ল হংকং। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন চলছে সেখানে। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই চিনের খসড়া আইনের বিরুদ্ধে এ দিন রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা।
করোনা সংক্রমণ রুখতে লডডাউন চলছে হংকংয়ে। কিন্তু এর মধ্যেই হংকংয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে চিন। এ নিয়ে সে দেশের আইনসভার বার্ষিক অধিবেশনে নয়া প্রস্তাব পেশও হয়ে গিয়েছে। তার প্রতিবাদে এ দিন হংকংয়ের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র কজওয়ে বে-তে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। মিছিল থেকে ‘স্বাধীন হংকং’-এর পক্ষে স্লোগান তুলতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। রাস্তাও অবরোধ করেন তাঁরা। তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। কজওয়ে বে এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। করোনা সংক্রমণ বন্ধ করতে একাধিক বিধি জারি হয়েছে হংকং জুড়ে। আট জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এ দিন তা নিয়ে নতুন করে হুঁশিয়ারি দেয় পুলিশ।
পরিস্থিতি কিছুটা আয়ত্তে এলেও, বেজিংয়ের এই নয়া পদক্ষেপ নিয়ে ফের ফুঁসছেন হংকংয়ের বাসিন্দারা। এ দিন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা শেষ বার দেখা গিয়েছিল গত বছর। এ বার হংকংয়ের জন্য চিনের প্রস্তাবিত নয়া আইনকে কেন্দ্র করে ফের বিক্ষোভ দানা বাঁধছে।
আরও পড়ুন: উহানের ল্যাবে করোনাভাইরাস ছিল, কিন্তু কোভিড-১৯-এর সঙ্গে তার মিল নেই, দাবি চিনা গবেষকের
চিনের ওই খসড়ায় হংকংয়ের জন্য নয়া আইনের কথা বলা হয়েছে। যার আওতায় রাষ্ট্রদ্রোহ, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম নিষিদ্ধ করার জন্য কড়া পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হংকংয়ে ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। চিন এবং হংকংবাসীর মৌলিক স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিবৃতিও দিয়েছে চিনা বিদেশমন্ত্রক। কিন্তু আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, এই নয়া আইন হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতায় শেষ পেরেক পুঁতে দেবে।
আরও পড়ুন: ‘ঠান্ডাযুদ্ধের কিনারার দিকে ঠেলে দিচ্ছে আমেরিকা’, বিস্ফোরক চিনের বিদেশমন্ত্রী
দীর্ঘ দিন ধরেই ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিল হংকং। দু’দশক আগে অবশ্য চিনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়। তবে চিনের মূল ভূখণ্ডের চেয়ে আরও উচ্চতর গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে হংকংয়ের। যে কারণে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন হংকংবাসী। এর আগে বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল নিয়েও আন্দোলন হয় হংকংয়ে। যে বিলের আওতায় বিচারের প্রয়োজনে যে কোনও অপরাধীকে হংকং থেকে চিনে প্রত্যর্পণ করা যায়। তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন হংকংয়ের বাসিন্দারা। অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগে, ২০০৩ সালেও এমনই আইনের বেড়ি পরানোর চেষ্টা করেছিল চিন। কিন্তু তার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।