Bangladesh Protest

মন্ত্রী, সাংসদদের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর, আগুন! এক দফা দাবিতে বাংলাদেশ উত্তাল, চলছে অসহযোগ

আবার ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। এ বার দাবি একটাই, শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ। রবিবার হাজার হাজার ছাত্র ঢাকার রাস্তায় নেমেছিলেন। সন্ধ্যা থেকে চলছে কার্ফু।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০০
Share:

ঢাকার রাস্তায় ছাত্র বিক্ষোভ চলছে। ছবি: পিটিআই।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর এ বার এক দফা দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশ। ছাত্র আন্দোলনের ঝাঁজ ক্রমশ বাড়ছে। নতুন করে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো। রবিবার সারা দিনে দেশের একাধিক মন্ত্রী, শাসকদল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং সংসদ সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বিক্ষোভকারীদের সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছে পুলিশ। মন্ত্রীদের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করা হয়েছে। আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক বাড়িতে। সঙ্গে থানা-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ডাকে নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। এর আগে ছাত্রদের বেশ কয়েক দফা দাবি ছিল। এ বার দাবি একটাই— শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ। এক দফা দাবিতে রবিবার হাজার হাজার ছাত্র ঢাকার রাস্তায় নেমেছিলেন। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় তাঁদের সংঘর্ষ হয়েছে। সরাসরি নেতা, মন্ত্রীদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রথম আলো জানাচ্ছে, চাঁদপুরে বাংলাদেশের সমাজ কল্যাণমন্ত্রী দীপু মনির বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। চাঁদপুর পুরসভার কার্যালয়েও ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া, কালীবাড়ি পুলিশ কার্যালয় এবং আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

বরিশালের নবগ্রাম রোডে দেশের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের বাড়িতেও ঢুকে পড়েছিলেন আন্দোলনকারী ছাত্রেরা। ফারুক বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্যও বটে। তাঁর বাড়িতে ঢুকে জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। বাড়ির সামনে থাকা মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হামলাকারীদের থামাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে।

Advertisement

ময়মনসিংহে দেশের প্রাক্তন গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের বাড়িতেও বাইরে থেকে ঢিল ছুড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আওয়ামী লীগের অন্তত ২০টি কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। তাঁর বাড়ির এসি, জানলার কাচ, ফুলের টব রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিমের বাড়িতেও। এ ছাড়া, সারা দেশে অনেক থানা এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রবার বুলেট এবং ছররা গুলিও ব্যবহার করা হয়েছে।

ছাত্রদের আন্দোলন কঠোর হাতে দমন করতে চায় হাসিনা সরকার। রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম আলো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার ই আলম সরকারকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, হাসিনা ‘নৈরাজ্য’ দমনে এগিয়ে আসার জন্য দেশের মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাসিনা বৈঠকে বলেন, ‘‘যাঁরা হিংসা চালাচ্ছেন, তাঁরা কেউই ছাত্র নন, তাঁরা সন্ত্রাসবাদী।’’ রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্ফু জারি করা হয়েছে বাংলাদেশে। বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। সোমবার থেকে তিন দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয়, তা অবশ্য সময়ই বলবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement