প্রধানমন্ত্রী হবেন, কিন্তু পোশাক পরবেন না। জানিয়েছেন রাজনীতির এক ছাত্রী। যাঁকে নিয়ে এখন ফেসবুক-টুইটারে জোর চর্চা।
৩১ বছরের ওই ছাত্রীর নাম লরা আর্মহার্স্ট। লরা ব্রিটেনের একটি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। আবার একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত এক কর্মীও তিনি।
লরা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নীতি খুবই খারাপ। আর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবহেলা কাম্য নয়। তাঁর যুক্তি, তিনি এ বিষয়ে অনেক ভাল কাজ করতে পারবেন। তবে তার জন্য তাঁকেই প্রধানমন্ত্রী হতে হবে।
বরিসের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে লন্ডনের বিভিন্ন রাস্তায় প্রতিবাদ বিক্ষাভ দেখান এক সন্তানের মা লরা। তবে তাঁর বিক্ষোভের একটি বিশেষত্ব আছে।
প্রতিবাদের সময় নিজের ঊর্ধ্বাঙ্গ উন্মুক্ত রাখেন লরা। কখনও পোস্টারে, কখনও স্টিকারে শরীর ঢাকেন। সেই পোস্টারে যেমন জলবায়ু সংক্রান্ত সতর্কতার বার্তা দেওয়া থাকে, তেমন থাকে বরিসের পদত্যাগের দাবিও।
এ ভাবেই বিক্ষোভের মঞ্চে ওঠেন। এমনকি টিভির পর্দাতেও উন্মুক্ত শরীরে ক্যামেরার সামনে এসে দাঁড়ান। নিজের ‘বিপ্লব’ এবং ‘বৈপ্লবিক’ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
লরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী হলেও এ ভাবে দফতর সামলাবেন তিনি। তেমন হলে লরা হবেন বিশ্বের প্রথম ‘টপলেস’ বা ঊর্ধ্বাঙ্গের আবরণমুক্ত প্রধানমন্ত্রী।
লরা অবশ্য মনে করেন, এতে দোষের কিছু নেই। শরীরে পোশাক রাখা বা না রাখার স্বাধীনতা সকলের আছে। থাকাও উচিত। প্রধানমন্ত্রী হলেই বা সেই স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে কেন!
পোশাক খুলতে লরারও আপত্তি নেই। সোনালি চুলের ব্রিটিশ ললনার মত, তার উন্মুক্ত শরীর যদি জাতির কল্যাণে বিশেষ কোনও উদ্দেশ্যপূরণে কাজে লাগে, তাতে আপত্তি কিসের। আর এ ক্ষেত্রে তাঁর পোশাক খুলে উন্মুক্ত পদসঞ্চার বৃহত্তর স্বার্থে কাজে লাগছে বলেই মনে করছেন তিনি। অন্তত, এ ভাবে তাঁর বিক্ষোভ সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে। তাঁকে নিয়ে, তাঁর শরীর নিয়ে, তাঁর বিক্ষোভের পথ নিয়ে চর্চা হচ্ছে।
তবে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে শুধু পোশাক খোলেননি লরা, অনশনও শুরু করেছেন। তাঁর আশা, উন্মুক্ত দেহ বিষয়টিতে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অনশন বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করবে।
তবে এক সন্তানের জননীর বিষয়টি নিয়ে সামান্য ভয়ও আছে। তিনি বলেছেন, ইতিমধ্যেই কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাঁর আশঙ্কা বরিসের অবহেলা তাঁকে মৃত্যুমুখে না ঠেলে দেয়। তবে এ সবের পরও সিদ্ধান্তে পিছ পা হচ্ছেন না তরুণী।
পূর্ব সাসেক্সের ব্রাইটনের বাসিন্দা লরা। রাজনীতির ছাত্রী মনে করেন তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে দেশ শাসনে কোনও ক্ষতি হবে না। বিশ্বাস করেন তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে নীরস রাজনীতিকে খানিক আকর্ষণীয় করে তুলবেন।
লরার মতে, অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো রাজনীতিতেও মেয়েরা কিছুটা কোণঠাসা। পোশাক খুলে যদি সেই খরাও কাটানো যায়, তবে ক্ষতি কি! লরার বক্তব্য, ‘‘শুধু পোশাক খোলার জন্য অন্তত আমাকে নিকৃষ্ট প্রতিপন্ন করা ঠিক হবে না।’’