রোজিনা ইসলাম
অনুমতি ছাড়া জাতীয় গোপন নথির ছবি তোলা ও কিছু নথি সরানোর অভিযোগে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হল বাংলাদেশের মহিলা সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকার ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি অনুসারে চুরি ও ১৯২৩ সালের ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারের আগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিবের ঘরে আটকে রাখা হয়। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সোমবার বেলা সাড়ে তিনটের সময় রোজিনা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের দাবি, রোজিনা করোনার টিকা নিয়ে রাশিয়া ও চিনের সঙ্গে সম্প্রতি স্বাক্ষর করা চুক্তির নথিপত্র নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব ও একজন পুলিশ কর্মচারীর হাতে ধরা পড়েন তখনই। একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে মন্ত্রকের একজন কর্মী রোজিনার গলা টিপে ধরেছেন।
বাংলাদেশের একটি প্রথম সারির সংবাদপত্রের সাংবাদিক রোজিনা বরাবরই স্বাস্থ্য মন্ত্রক সহ অন্যান্য মন্ত্রকের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে লেখালেখি করেছেন। সাংবাদিকদের একাংশের দাবি, সেই আক্রোশ থেকেই গ্রেফতার করা হল তাঁকে। স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এই মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই সাংবাদিককে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার বেলা এগারোটায় তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হলেও তা নামঞ্জুর করে রোজিনাকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। খারিজ হয়ে যায় পরিবারের পক্ষ থেকে করা জামিনের আবেদনও।
এ দিকে, রোজিনার গ্রেফতারে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন সাংবাদিকেরা। রাতেই শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন তাঁদের একাংশ। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাংবাদিক সম্মেলনও বয়কট করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা শহরে বিশাল জমায়েতেরও আয়োজন করা হয়।