বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী। ফাইল চিত্র।
একুশ বছর আগে ঘটা গুজরাতের সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে ফের কূটনৈতিক চাপানউতোর শুরু হল দিল্লিতে। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি-টু গুজরাত হিংসা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রচার করেছে, যার নাম ‘দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’। সেখানে নরেন্দ্র মোদীর প্রসঙ্গ যে ভাবে এসেছে, তাতে একেবারেই খুশি নয় ভারত সরকার। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকও মনে করছেন, মোদীর চরিত্রায়ণ সেখানে ঠিক হয়নি।
২০০২-এর গুজরাত হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে সেই রাজ্যে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে ওই তথ্যচিত্রে। ওই তথ্যচিত্র ভারতে দেখানোর ব্যবস্থা না থাকলেও বিশ্বের অন্যত্র এবং সামাজিক মাধ্যমে তা (অংশবিশেষ) দেখা যাচ্ছে। যদিও ওই অশান্তিতে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কোনও ভূমিকা ছিল না বলে গত বছর এই সংক্রান্ত মামলার চূড়ান্ত রায়ে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এমতাবস্থায় নতুন করে ফের গুজরাত হিংসা এবং মোদীর ভূমিকা নিয়ে চর্চা শুরু হওয়ায় আজ তোপ দেগেছে কেন্দ্র। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচীর কথায়, ‘‘প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে এই তথ্যচিত্রটি ভারতে তৈরি হয়নি। তাই শোনা কথা এবং আমার কিছু সহকর্মীর কথার উপর ভিত্তি করেই আমি যা বলার বলছি। একটা কথা স্পষ্ট করে দেওয়া ভাল যে, আমরা মনে করছি, এই তথ্যচিত্র আসলে একটি অপপ্রচার। ভিত্তিহীন একটি ভাষ্য তৈরি করা হয়েছে। এই তথ্যচিত্র একপেশে, তথ্যসমৃদ্ধ নয়। সর্বোপরি এই তথ্যচিত্র তৈরি হয়েছে ঔপনিবেশিক মানসিকতার ভিত্তিতে।’’ বাগচীর কথায়, ‘‘লক্ষ করার মতো বিষয় হল এই তথ্যচিত্র তৈরি হয়েছে একটি সংস্থা এবং ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে। যে ঘটনায় আমরা আরও বেশি বিস্মিত, তা হল এই তথ্যচিত্রটি বানানোর উদ্দেশ্য কী? সত্যি বলতে কী, এই ধরনের প্রয়াসকে মান্যতা দিতেই আমরা রাজি নই।’’
ভারত সরকারের এই প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিবিসি-র বক্তব্য অবশ্য জানা যায়নি। তবে পাকিস্তান বংশোদ্ভূত এক পার্লামেন্ট সদস্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ওই তথ্যচিত্রের প্রসঙ্গ তুললে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক তাঁকে থামিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, তথ্যচিত্রে মোদীর চরিত্রায়ণ ঠিক নয় বলেই তাঁর ধারণা। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, সামনেই ঝুলে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করার বিষয়টি। এখন এই তথ্যচিত্র নিয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না ব্রিটেন।