—ফাইল চিত্র।
নারী পাচার ও একাধিক যৌন কেচ্ছায় অভিযুক্ত মার্কিন ধনকুবের জেফ্রি এপস্টাইনের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন ব্রিটেনের রাজকুমার অ্যান্ড্রু। এই অবস্থায় বুধবার রাজপরিবারের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন তিনি। অ্যান্ড্রু জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তাতে রাজপরিবারের জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত। রাজপরিবার সূত্রের খবর, বুধবার রানি ও যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে কথা বলার পরেই এই ঘোষণা করেন রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের তৃতীয় সন্তান ডিউক অব ইয়র্ক। ইতিমধ্যেই কয়েকটি সংস্থা জানিয়ে দিয়েছে, অ্যান্ড্রুর উদ্যোগে তারা আর টাকা ঢালবে না। বিষয়টি নিয়ে বোর্ড মিটিং ডাকার কথা জানিয়েছে রাজকুমারের সাহায্যপ্রাপ্ত আর একটি সংগঠন।
সম্প্রতি একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে অ্যান্ড্রুর দেওয়া সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, দু’দশক আগে এক মার্কিন কিশোরীর সঙ্গে জোর করে যৌন সংসর্গ করেছিলেন তিনি। জেফ্রিই তাঁকে ওই কিশোরীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন। সে দিনের সাক্ষাৎকারে জেফ্রির সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা মেনে নিলেও নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন অ্যান্ড্রু। এমনকি জেফ্রির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সে সময়ে যা ঠিক মনে হয়েছিল তা-ই করেছি। জেফ্রির সূত্রে অনেকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। যা আমার কাজে লেগেছে। জীবনের ওই অধ্যায় আমাকে একটা শিক্ষা দিয়েছে।’’ অ্যান্ডুর ওই মন্তব্য সংবেদনশীল নয় বলে নিন্দা করেছেন অনেকেই।
বুধবার অবশ্য এ বিষয়ে সুর বদলেছেন রাজকুমার। জেফ্রির নারী পাচার চক্রের শিকার হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের সমবেদনা জানিয়েছেন অ্যান্ড্রু। এ বিষয়ে ‘কোনও যথাযথ তদন্তকারী সংস্থাকে’ সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন রাজকুমার। রানির পরামর্শেই এই ভোলবদল বলে মনে করছেন অনেকে।
জেফ্রির হাতে নির্যাতিতা পাঁচটি মেয়ের আইনজীবী লিসা ব্লুম বৃহস্পতিবার টুইট করে বলেন, ‘‘শুধু তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে নয়, আমার মতো যাঁরা নির্যাতিতাদের হয়ে লড়াই চালাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গেও অ্যান্ড্রুর কথা বলা উচিত। জেফ্রির বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষ্য দিতে রাজকুমার অ্যান্ড্রুকে ডেকে পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে। জানি বিষয়টি কঠিন। তবে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। কারও কাছে কোনও প্রয়োজনীয় তথ্য থাকলে তা জানানো উচিত।’’ লিসা বলেছেন, ‘‘এ বিষয়ে রাজকুমারের সমস্ত সহকারী এবং কর্মচারীদের সাহায্য চাই। জেফ্রির সঙ্গে অ্যান্ড্রুর বন্ধুত্বের বিষয়ে জানতে এই সংক্রান্ত সমস্ত ই-মেল, মেসেজ, ফোনের কললিস্ট, বেড়ানোর তালিকা, সময়সূচি সব প্রকাশ করা হোক। তবেই অপরাধের শিকড়ে পৌঁছনো যাবে।’’