শি জিনপিং-এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
আগামী সপ্তাহে ব্রিকস সম্মেলনের আসরে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে দেখা হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তার ঠিক আগে আজ পূর্ব লাদাখের সীমান্ত সমস্যা মেটাতে চুসুল-মলডো সীমান্তবর্তী এলাকায় বৈঠকে বসলেন দু’দেশের সেনাকর্তারা। বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে তিন বছরের আগেকার স্থিতাবস্থা অবিলম্বে বহাল রাখা ও ডেপসাং ও ডেমচক থেকে চিনা সেনাদের পিছিয়ে যাওয়ার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।
তিন বছর আগে গলওয়ান উপত্যাকায় ভারতীয় অংশে আচমকাই ঢুকে আসে চিন সেনা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে ক্ষয়ক্ষতি হয় উভয় শিবিরের। তারপর থেকেই সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা চলছে দু’দেশের মধ্যে। যার ফল হিসাবে ২০২১ সালে গোগরা হটস্প্রিং এলাকা ও প্যাংগং লেকের বিস্তীর্ণ অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয় দু’দেশই। ভারত ফিরে যায় ফিঙ্গার-২ ও ফিঙ্গার-৩ এর মাঝে থাকা ধানসিংহ ধাপা পোস্টে।
অন্য দিকে, চিন সেনা ফিঙ্গার ৮ থেকে পিছিয়ে যায়। কার্যত ফিঙ্গার-৩ থেকে ফিঙ্গার-৮ এই দশ কিলোমিটার এলাকা আপাতত বাফার জ়োন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, সেনা প্রত্যাহারের ফলে বিস্তীর্ণ এলাকায় (ফিঙ্গার ৩-৮) টহলদারিতে যাওয়ার অধিকার হারিয়েছে ভারতীয় সেনা। ২০২০ সালে গলওয়ানে হওয়া সংঘর্ষের আগে ওই পয়েন্টগুলিতে ভারতীয় সেনা টহলদারিতে যেতে পারত। কিন্তু চিনের সঙ্গে সমঝোতা করে ওই এলাকা হারিয়েছে ভারত। যদিও নরেন্দ্র মোদী সরকারের দাবি, চিন সেনার কাছে কোনও জমি হারায়নি ভারত।
আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস বৈঠকের পরে আগামী মাসে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন রয়েছে। দু’টি বৈঠকেই উপস্থিত থাকার কথা নরেন্দ্র মোদী ও শি জিংপিং-এর। তার আগে দুই শিবিরের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আজকের বৈঠকটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। আজ ভারতের পক্ষে বৈঠকের নেতৃত্ব দেন লে-র ১৪ কোরের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাশিম বালি। চিনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জিংজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের কমান্ডার। সূত্রের মতে, আজকের বৈঠকে ডেপসাং এলাকায় চিন সেনা যে অবস্থানে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে সেখান থেকে পিছিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারত। ওই এলাকায় চিন সেনার উপস্থিতির জন্য ভারতের কাছে রণকৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ দৌলত বেগ ওল্ডি এয়ার স্ট্রিপ কার্যত অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাছাড়া, চিনা সেনার এগিয়ে আসার কারণে ওই এলাকায় নজরদারিও চালাতে পারছে না ভারত। একই ভাবে ডেমচক এলাকায় নিজেদের অবস্থান ছেড়ে অনেকটাই এগিয়ে এসেছে চিন। বাঙ্কার বানিয়ে ফেলেছে চিনা সেনারা। সে সব এলাকা থেকে পিছিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পাকা কাঠামোযুক্ত বাঙ্কার-সহ সব কিছু নষ্ট করে দিতে বলা হয়েছে চিনকে।