অনুতপ্ত: ফ্রান্সের লুর্দের গির্জার সিঁড়িতে এ ভাবেই হাঁটু গেড়ে বসে ক্ষমাপ্রার্থনা করছেন রাইমের আর্চবিশপ এরিক দ্য মুল্যাঁ-বোফো। তাঁর সঙ্গে শামিল হন ফ্রান্সের আরও বেশ কয়েক জন যাজক। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
ফ্রান্সের ক্যাথলিক গির্জাগুলিতে বছরের পর বছর শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত কাল ফ্রান্সের লুর্দের গির্জায় শিশুদের যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে হাঁটু গেড়ে বসে প্রার্থনায় শামিল হলেন ফরাসি যাজকেরা। ওই প্রার্থনায় নিজেদের অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
গত শতকের পঞ্চাশের দশক থেকে ফান্সের গির্জাগুলিতে কয়েক হাজার শিশুর উপরে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে প্রকাশ, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, নির্যাতনকারী অন্তত তিন হাজার যাজকের বিরুদ্ধে তারা প্রমাণ সংগ্রহ করেছিল। শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের দায় যে গির্জাগুলির তা সম্প্রতি স্বীকার করে নিয়েছেন বিশপেরা। গত কাল লুর্দে অনুশোচনা প্রকাশের জন্য প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ১২০ জন আর্চবিশপ, বিশপ এবং সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে একটি ছবির উন্মোচন করা হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি ক্রন্দনরত শিশুর মাথা। ওই ছবিটি গির্জার দেওয়ালে নির্যাতনের ‘স্মৃতি হিসাবে’ রাখা থাকবে। ছেলেবেলায় যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া এক ব্যক্তি ওই ছবিটি তুলেছিলেন। তিনি যে যন্ত্রণা সহ্য করেছিলেন, তা ওই প্রার্থনা অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের বিশপ কনফারেন্সের মুখপাত্র হিউ দ্য উইল্মঁ বলেন, ‘‘লুর্দের এই জায়গাটিকে আমরা এত নির্যাতন, নাটক ও হিংসার প্রথম স্মৃতি হিসেবে স্মরণ করতে চাই।’’ ওই প্রার্থনার পরে একটি অনুষ্ঠানে যাজকেরা স্বীকার করে নিয়েছেন, শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতন একটা ‘রীতি’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ওই প্রার্থনায় হাজির ছিলেন যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া অনেকে। তাঁরা মনে করেন, যাঁরা এ রকম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত এবং গির্জাগুলির আমূল সংস্কার জরুরি। ছোটবেলায় নির্যাতনের শিকার হওয়া ভেরোনিক গার্নিয়ার প্রার্থনা সভায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, যাজকদের এই স্বীকারোক্তি সময়োপযোগী। এর ফলে নির্যাতিতেরা ন্যায়বিচার পেলেন। যদিও শিশুকালে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া ফাদার জিন-মারি ডেলবোসের মতো অনেকেই এই প্রার্থনা অনুষ্ঠান বয়কট করেছিলেন।