প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বেড়ে ফের ব্যারেল প্রতি ৮৪ ডলার ছুঁতেই প্রমাদ গুনছে ভারতের সাধারণ মানুষ। করোনার দু’টি ঢেউয়ের অভিঘাতে কাহিল হওয়ার পরে গত বছর তাঁদের জীবন আরও কঠিন হয়েছিল ১০০ টাকা পেরিয়ে যাওয়া পেট্রল-ডিজ়েলের ধাক্কায়। এখন দেশে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। অর্থনীতির উদ্বেগ বাড়িয়ে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার, পেট্রল-ডিজ়েলের চড়া দর যাকে ইন্ধন জোগায়। অথচ সেই দীপাবলির সময়ে কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুল্ক ও বিভিন্ন রাজ্যের ভ্যাট ছাঁটাইয়ে দাম কমার পর থেকে গত ৬৮ দিন ধরে পেট্রল-ডিজ়েল স্থির। তাই প্রশ্ন উঠছে, বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট গত বেশ কয়েক দিন ধরে নাগাড়ে চড়তে থাকলেও দেশে তেলের দাম কি বাড়ছে না উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটের খাতিরে? সে ক্ষেত্রে ভোট মিটলেই জ্বালানির দর ছুটবে কিনা, সেই সন্দেহ তীব্র হচ্ছে। এর আগে কর্নাটক, গুজরাতে এবং পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের সময় যে অভিজ্ঞতা হয়েছে সকলের।
গত ৪ নভেম্বর কেন্দ্র পেট্রল ও ডিজ়েলে লিটার পিছু যথাক্রমে ৫ ও ১০ টাকা করে শুল্ক কমায়। বেশ কিছু রাজ্য ভ্যাটও ছাঁটে। তবে তারপর থেকে দুই জ্বালানির দর স্থির। ৫ নভেম্বর ব্রেন্ট উঠেছিল ব্যারেল প্রতি ৮২.৭৪ ডলারে। ১ ডিসেম্বর নামে ৬৮.৮৭-তে। তাতে ভারতের তেল আমদানির খরচ কমলেও জ্বালানি বিন্দুমাত্র সস্তা হয়নি। বুধবার ব্রেন্ট ফের প্রায় ৮৪ ডলার হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বিশ্ব বাজারে তেল সস্তা হলে দেশে তার ছাপ তেমন পড়ে না। উল্টোটা হলে নিমেষে বদলে যায় ছবি। তাই অস্বস্তি বাড়ছে, সঙ্গে ধন্দও।
তেল সংস্থাগুলির বিভিন্ন সূত্রও এমন রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার ইঙ্গিতই দিচ্ছেন। কেউ কেউ মনে করাচ্ছেন, গোড়ায় শুল্ক ছাঁটতে কেন্দ্র রাজি না-হলেও পরে কয়েকটি উপনির্বাচনে পরাজয়ের জন্য তাতে সম্মত হয় বিজেপি সরকার। এখন আবার পাঁচ রাজ্যে ভোটের মুখে জ্বালানির দর বাড়িয়ে বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার মতো ভুল করতে চায় না তারা। তাই দর কমায় যে লাভ করেছিল তেল সংস্থাগুলি তার প্রেক্ষিতেই অশোধিত তেলের এখনকার এই বাড়তি বোঝা বইতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহলে তাই প্রশ্ন, ভোট মিটলেই কি পকেটে তেলের ছেঁকা আরও দগদগে হবে?
3