বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ছবি: টুইটার
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বুধবারই ঢাকায় পৌঁছেছেন ওই অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি কোবিন্দ। তিন দিনের সফর। বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশ সফরে গেলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের আমন্ত্রণে বিশেষ অতিথি হিসাবে ঢাকায় এসেছেন কোবিন্দ। বুধবার বাংলাদেশ সময় সোয়া ১১টায় ‘এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ান’ ঢাকায় পৌঁছয়। সেখানে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ ও তাঁর স্ত্রী সবিতাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান সস্ত্রীক বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আব্দুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের সঙ্গে মেয়ে স্বাতীও গিয়েছেন। ২১ বার তোপধ্বনি এবং সেনা বাহিনীর রাষ্ট্রীয় অভিবাদনের পরে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ ৩২ নম্বর ধানমন্ডি রোডে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন এবং জাদুঘর পরিদর্শন করেন। সেখানে শেখ মুজিবের মুরালের সামনে ফুল দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান ভারতের রাষ্ট্রপতি। এই বাড়িতেই অভ্যুত্থানকারী সেনাদের হাতে সপরিবার নিহত হয়েছিলেন মুজিব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা। মুজিবের দ্বিতীয়া কন্যা শেখ রেহানা রাষ্ট্রপতিকে বাড়ি ও জাদুঘর ঘুরিয়ে দেখান।
মধ্যাহ্নভোজের পরে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন হোটেলে এসে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তার পরে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিজের টুইটার হ্যান্ডল থেকে বহু ছবি পোস্ট করেন কোবিন্দ। রাতে কোবিন্দের সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজন করেন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ। সেখানে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন কোবিন্দ। বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিদেশমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য তিনি নিয়ে যান রাষ্ট্রপতি ভবনের নিজস্ব পাকশালায় তৈরি হরেক রকমের মিষ্টান্ন, বাহারি কেক আর বিস্কুট। বৃহস্পতিবার প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কোবিন্দ বিশেষ অতিথি হিসাবে যোগ দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সংসদ ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করার কথা তাঁর। এর পর ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ নামে অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করবেন তিনি।সফরের শেষ দিনে রামনাথ কোবিন্দের ঢাকার রমনা কালীমন্দিরের সদ্য সংস্কার হওয়া অংশের উদ্বোধন করার কথা। সে দিন দুপুরেই তিনি দিল্লিতে ফিরে আসার কথা তাঁর।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার পাড়া-মহল্লা, সড়কের মোড়ে মোড়ে বাজছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এবং আর মুক্তির গান। বাড়ির ছাদে, অফিস-আদালত, দোকানপাটে, এমনকী অনেক যানবাহনেও উড়ছে জাতীয় পতাকা। বুধবার রাত থেকেই সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবন এবং রাস্তার বাতিস্তম্ভে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।