প্রাগে গণহত্যার নেপথ্যে রয়েছেন ডেভিড কোজাক (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
পোল্যান্ডের ইতিহাস নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়ছিলেন। পড়াশোনায় ‘অসম্ভব ভাল’। সেই ডেভিড কোজাক কী ভাবে এই কাণ্ড ঘটালেন, এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না পরিচিতেরা। পুলিশ বলছে, যথেষ্ট পরিকল্পনা করেই বৃহস্পতিবার প্রাগের চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা চালিয়েছেন ডেভিড। তার আগে খুন করেছিলেন নিজের বাবাকেও।
বৃহস্পতিবার চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে এলোপাথাড়ি গুলি চালান সেখানকার ছাত্র ডেভিড। প্রাণ যায় অন্তত ১৪ জনের। আহত প্রায় ২৫ জন। পুলিশ বলছে, মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন ২৪ বছরের কোজাক। প্রাগ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে একটি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। প্রাগ পুলিশের প্রধান মার্টিন ভন্দ্রাসেক জানিয়েছেন, দারুণ ভাল ছাত্র ছিলেন ডেভিড।
পুলিশ জানিয়েছে, ডেভিডের কাছে ছিল বেশ কিছু বন্দুক, যার লাইসেন্স ছিল। বৃহস্পতিবার ওই কাণ্ড ঘটানোর সময় তাঁর সঙ্গে ছিল একাধিক অস্ত্র। পুলিশ মনে করছে, পরিকল্পনা করেই ওই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন ডেভিড। প্রাগে গণহত্যা চালানোর আগে হিউস্টনে নিজের বাবাকেও খুন তিনি করেছিলেন বলে ধারণা পুলিশের। তবে বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে কোনও সঙ্গী ছিল না। একাই এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর থেকে মিলেছিল ডেভিডের গুলিবিদ্ধ দেহ। তিনি আত্মঘাতী হয়েছিলেন, না কি পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায়, তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
গণহত্যা যে চালাতে পারেন, তার ইঙ্গিত একটি মেসেজিং অ্যাপে দিয়েছিলেন ডেভিড। সেখানে গুলি চালানোর আগে ‘ডায়েরি’-র মতো নিজের কথা লিখেছিলেন তিনি। তিনি লেখেন, ‘‘আমি কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুলি চালাতে চাই। তার পর নিজে সম্ভবত আত্মঘাতী হব। আমি সব সময়েই খুনের কথা ভাবতাম। ভবিষ্যতে বোধ হয় পাগল হয়ে যাব।’’ প্রাগের বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই কাণ্ড ঘটানোর সাত দিন আগে এক সদ্যোজাতকে তিনি খুন করেছিলেন বলেও জানা গিয়েছে।
ঠিক কেন এই কাণ্ড ঘটালেন ডেভিড, সেই বিষয়টি খোলসা করেনি পুলিশ। চেক প্রজাতন্ত্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভইট রাকুসান জানিয়েছেন, এই গণহত্যার নেপথ্যে কোনও কট্টরপন্থী বা সন্ত্রাস গোষ্ঠীর যোগ নেই। ঘটনার পর দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।