Democracy

বিরোধীশূন্য রাজনীতি গণতন্ত্রে কাঙ্ক্ষিত নয়

ভারতবর্ষের মতো রাশিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র নয়। এ দেশের প্রেসিডেন্ট দেশের সর্বোচ্চ প্রধান এবং সাধারণ নির্বাচনের দ্বারা নির্বাচিত হন। পার্লামেন্ট বা দুমার নির্বাচন আলাদা ভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

Advertisement

প্রদ্যুম্ন চট্টোপাধ্যায়

মস্কো শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ভারতে নির্বাচন পর্ব শুরু হয়ে গেল। দেশ-বিদেশের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যমে এখন ভোটের প্রার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলছে।

Advertisement

মাসখানেক আগে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হল। নির্বাচনের আগে, প্রশাসনের প্রাধান্য ছিল জনগণকে নির্বাচনের দিনক্ষণ সম্বন্ধে অবহিত করে ভোট দিতে আসার জন্য অনুরোধ করা। তাই মোবাইল অ্যাপ থেকে শুরু করে রাস্তার বিলবোর্ড-সহ বিভিন্ন মাধ্যমে জনগণকে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছিল।

ভারতবর্ষের মতো রাশিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র নয়। এ দেশের প্রেসিডেন্ট দেশের সর্বোচ্চ প্রধান এবং সাধারণ নির্বাচনের দ্বারা নির্বাচিত হন। পার্লামেন্ট বা দুমার নির্বাচন আলাদা ভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

Advertisement

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে, নির্বাচন কমিশনের কাছে, রুশ সংসদে উপস্থিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীরা মনোনয়নের জন্য দরখাস্ত করতে পারেন। দরখাস্ত করতে পারেন নির্দলীয় প্রার্থীরাও, কিন্তু প্রার্থী হিসেবে যোগ্যতা অর্জনের জন্য তাঁদের ন্যূনতম ৩ লক্ষ রুশ নাগরিকের স্বাক্ষর করা দরখাস্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিতে হয়।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং আরও তিন জন প্রার্থী এ বার রাশিয়ার নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন লাভ করেছিলেন। ১৫ থেকে ১৭ মার্চ, তিন দিন এই নির্বাচন পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল অনুযায়ী বর্তমান প্রেসিডেন্ট ৮৮ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে পঞ্চম মেয়াদের জন্য পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমান রুশ ইতিহাসে এই জয়ের শতাংশ অবশ্যই একটি অভূতপূর্ব রেকর্ড।

ভোটের ফলাফল ‘পূর্ব নির্ধারিত উপসংহার’ হলেও, নিঃসন্দেহে বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্ট তাঁর দেশবাসীর মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবু তথ্য থেকে জানা গিয়েছে যে, এ বার ভোটে ১ কোটি ৩০ লক্ষ ফাঁকা ব্যালট (যা ভারতীয় ব্যালটে ‘নোটার’ সমকক্ষ) জমা পড়েছে, যা মোট ভোটের প্রায় ১.৬ শতাংশ। এটা ২০১৮ সালের নির্বাচনে তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি। সরকারি তথ্য আরও বলা হয়েছে যে, ভোটের হার ছিল ৭৭ শতাংশের বেশি।

তবে বিশ্বের কিছু সংবাদমাধ্যম রাশিয়ার নির্বাচনী প্রথাকে ‘পরিচালিত গণতন্ত্রের’ তকমা
দিয়েছে! এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বাকি তিন প্রার্থী বর্তমান প্রেসিডেন্টকে এবং তাঁর সরকারের নীতিকে সমর্থন করেছেন। কয়েক জন বিরোধী প্রার্থীও ছিলেন কিন্তু তাঁরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার যোগ্যতা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে অর্জন করতে পারেননি। যুদ্ধকালীন বর্তমান এই বিশেষ পরিস্থিতিতে, সরকারি সংবাদমাধ্যমে, সরকার-বিরোধী মতামত যে স্থান পাবে না, এটাই স্বাভাবিক।

বিরোধীশূন্য রাজনীতি কোনও গণতন্ত্রের জন্যই কাঙ্ক্ষিত নয়। আশায় থাকব, ভারতবর্ষে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে এবং ফলাফল নির্বিশেষে বহুদলীয় রাজনীতি ও ভিন্ন রাজনৈতিক মতবাদ উপস্থিত থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement