ব্রিকস মঞ্চে পুতিন-শি’র সঙ্গে কথা প্রধানমন্ত্রীর

জঙ্গি কার্যকলাপ উন্নয়ন ও শান্তির পক্ষে সব চেয়ে বড় বিপদ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

ত্রয়ী: ব্রিকস সম্মেলনে চিনফিং, পুতিন ও মোদী। ব্রাসিলিয়ায়। পিটিআই

সন্ত্রাসবাদকে কোনও অবস্থাতেই কেন বরদাস্ত করা যায় না, আজ ব্রাজিলে ব্রিকস সম্মেলনের প্লেনারি সেশনে তা ব্যাখ্যা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর যুক্তি, সন্ত্রাসবাদ যেমন মানুষের প্রাণ নেয়, তেমনই ভেঙে দেয় অর্থনৈতিক কাঠামো, ক্ষতি করে বিশ্ব বাণিজ্যেরও।

Advertisement

জঙ্গি কার্যকলাপ উন্নয়ন ও শান্তির পক্ষে সব চেয়ে বড় বিপদ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেন, ‘‘সম্প্রতি হিসেব করে দেখা গিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলির অর্থনৈতিক বৃদ্ধি দেড় শতাংশ কমেছে। যার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক লক্ষ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, সন্ত্রাসের কারণে গত ১০ বছরে বিশ্ব ২.২৫ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

ব্রিকস সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে চিনের সঙ্গে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। স্থির হয়েছে, খুব শীঘ্রই দু’দেশের শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রীদের নিয়ে একটি কমিটি গঠিত হবে। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সেই কমিটি আশু পদক্ষেপ করবে বলে জানানো হয়েছে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে। চিনের পাশাপাশি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও দীর্ঘ বৈঠক করেন মোদী। কথা হয়েছে বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে বিশেষ সংযোগ বাড়ানো নিয়ে। আগামী মে মাসে রাশিয়ার বিজয় দিবসে মোদীকে আমন্ত্রণও করেছেন পুতিন।

Advertisement

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, এক দিকে বাণিজ্য এবং কৌশলগত ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে মোদী সরকার। দক্ষিণ এশিয়ার ভূকৌশলগত অস্থিরতায় আমেরিকাকে পাশে নিয়ে নিজেদের পায়ের জমি শক্ত করতে চাওয়া হচ্ছে। চিন যখন আঞ্চলিক রাজনীতিতে পাকিস্তানের পাশে থেকে ভারতকে চাপের রাখছে, তখন পাল্টা হিসেবে মার্কিন অক্ষ মজবুত করা জরুরি হয়ে পড়ছে নয়াদিল্লির কাছে।

নিজেদের কূটনীতিতে ভারসাম্য বজায় রাখতে আমেরিকার বিপরীত মেরুতে অবস্থিত চিন এবং রাশিয়ার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনঘন বৈঠকও করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, উষ্ণায়নের মোকাবিলার প্রশ্নে রাশিয়া এবং চিনের মতো বৃহৎ দু’টি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বহাল রাখাটা সাউথ ব্লকের অগ্রাধিকার বলেই জানাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক। তাই ব্রিকস-এর মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে এই দৌত্য। বাণিজ্যের পাশাপাশি, চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংক্রান্ত মতপার্থক্যের সমাধান করতে দু’দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা শীঘ্রই বৈঠকে বলবেন বলে স্থির হয়েছে।

আরও পড়ুন: নির্দেশ নয়, তবে হতেই পারে তদন্ত, সুপ্রিম কোর্টের রাফাল-রায়ে চাঙ্গা দু’পক্ষই

আরও পড়ুন: শবরী-দ্বন্দ্বে ভিন্‌ ধর্মের বৈষম্য

আজ নিয়ে চলতি বছরে পুতিনের সঙ্গে মোদীর চার বার বৈঠক হল। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ঘনঘন দেখা হওয়ার ফলে আমাদের সম্পর্ক শক্তিশালী হয়েছে। রাশিয়ার বিজয় উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সানন্দে অপেক্ষা করছি, আবার পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে।’’ রাশিয়ান ভাষায় মোদীর টুইট, ‘‘বাণিজ্য, নিরাপত্তা এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দু’দেশ ব্যাপক হারে সহযোগিতার পথে রয়েছে।’’ পুতিনের কথায়, ‘‘এ বছরে এটা আমাদের চতুর্থ বৈঠক। আমরা বেশ কিছু বড় আকারের দ্বিপাক্ষিক প্রকল্প বাস্তবায়িত করছি। কারিগরি সহযোগিতাও বাড়ানো হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement