প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত একাধিপত্য নির্মূল করার ডাক দেওয়া হল চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াড বৈঠকে। কিন্তু চিনের নাম সরাসরি করা হল না। প্রধানমন্ত্রী নিজে তাঁর বক্তৃতায় জানালেন, ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার এই অক্ষ ‘কোনও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে’ নয়, ‘ভৌগোলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব এবং সম্প্রসারণবাদের' বিরুদ্ধে’। নাম না করলেও আমেরিকার ডেলাওয়ারে কোয়াড বৈঠকে চিন এবং তার প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সম্প্রসারণবাদ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হল। তৈরি হল সম্ভাব্য কৌশল। আমেরিকার প্রেসি়ডেন্ট জো বাইডেনকে বলতে শোনা গেল (তখন মাইক ঠিক মতো বন্ধ না হওয়ার কারণে), ‘‘আমাদের ধারণা, শি জিনপিং নিজের দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলির দিকে মন দিতে চেয়ে সেখানকার অস্থিরতা কমানোর চেষ্টা করছেন। আর তাই কূটনৈতিক পরিসর খুঁজছেন নিজেদের স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। চিন এখন এমনই মরিয়া, যে অঞ্চলের সর্বত্র, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের বারবার পরীক্ষায় ফেলবে। তার মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত বিষয়ও রয়েছে।’’
বৈঠকের গোড়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘আমরা এমন একটা সময়ে বৈঠকে বসেছি, যখন গোটা বিশ্ব সংঘাতময়। এই সময়ে মানবিকতার খাতিরে কোয়াডভুক্ত সমস্ত সদস্যের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার। আমরা সবাই আইনের শাসন মানা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে সমর্থন করি। শান্তিপূর্ণ ভাবে সংঘাত নিরসনে বিশ্বাসী। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা সমৃদ্ধ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল আমাদের সবার অগ্রাধিকার ও আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নিরাপত্তা, আধুনিক প্রযুক্তি, পরিবেশ, দক্ষতা নির্মাণের ক্ষেত্রে আমরা অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছি।’’
কোয়াড বৈঠকে মোদী, বাইডেন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানেজ়। বাইডেন তাঁর প্রারম্ভিক বক্তৃতায় বলেন, ‘‘আমরা গণতান্ত্রিক দেশ। গণতান্ত্রিক দেশগুলি জানে, কী ভাবে কাজ করতে হয়। সে কারণেই আমি প্রেসিডেন্ট পদ পাওয়ার পরেই আপনাদের কাছে এগিয়ে গিয়েছিলাম কোয়াডকে আরও উন্নত ও প্রাসঙ্গিক করার লক্ষ্যে। আজ চার বছর পর এই চারটি রাষ্ট্র কৌশলগত ভাবে আগের তুলনায় অনেক বেশি সঙ্ঘবদ্ধ।"
যৌথ বিবৃতিতে চিনকে লক্ষ্য করা বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক আইনকে মেনে চলার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ জোর দিচ্ছি। রাষ্ট্রপুঞ্জের সমুদ্র আইন সংক্রান্ত সনদে যা প্রতিফলিত হয়েছে, আমাদের সমর্থন বিশেষ করে তার উপর। আমরা চাই, সমুদ্রপথে শান্তি ও সুরক্ষা, স্থায়ী উন্নয়ন গড়ে তোলা, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করা।’