পুতিন এবং মোদী। ফাইল চিত্র।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে এ বার নয়াদিল্লি-মস্কো সম্পর্ক নিয়ে হুঁশিয়ারি দিল ওয়াশিংটন। শুক্রবার পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘‘ভারতের পাশাপাশি অন্য দেশগুলিকে আমাদের বার্তা— আমরা প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে তাদের রাশিয়া-নির্ভরতা দেখতে চাই না। আমরা এই বিষয়ে স্পষ্ট ভাষায় তাদের নিরুৎসাহিত করছি।’’
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়ানো এবং ভবিষ্যতে সামরিক সহযোগিতার পথ আরও প্রশস্ত করা আমেরিকার লক্ষ্য বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি কিরবির ঘোষণা, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকাকে বরাবরই গুরুত্ব দেয় আমেরিকা। যদিও পেন্টাগন মুখপাত্রের এই স্তূতির আড়ালে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি রয়েছে বলেই কূটনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এখনও সরাসরি কোনও পক্ষ নেয়নি নয়াদিল্লি। বুচায় রুশ সেনার গণহত্যার নিন্দা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রতিনিধি। আবার রাশিয়া নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে আমেরিকা তথা পশ্চিমী বিশ্বের নিন্দা প্রস্তাবে ভোটাভুটি থেকে বিরত থেকেছেন। যুদ্ধের আবহে রুশ বিদেশমন্ত্রী ভারত সফরে এসে তেল বিক্রি নিয়েও আলোচনা করেছেন। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলির জারি করা আর্থিক নিষেধাজ্ঞায় সায় দেয়নি ভারত। জো বাইডেনের সরকার এ বার রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সমঝোতা ছিন্ন করার ‘বার্তা’ দিয়ে সেই ‘ভারসাম্যের কূটনীতির’ পথ বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে বলেই মনে করছেন বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিকদের একাংশ।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পও রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনা নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের তৎপরতা দেখে অতীতে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি আমেরিকার সহকারী বিদেশ সচিব ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের ভারত সফরের পর প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাশিয়া থেকে অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম না-কেনার জন্য নয়াদিল্লির উপর ধারাবাহিক ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ‘বিকল্পের’ মূল্য চড়া হওয়ার কারণেই সেই প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হচ্ছে না।