Myanmar Peace Talk

যুদ্ধ থামাতে সমঝোতার পথে মায়ানমারের সেনা জুন্টা, চিনের মধ্যস্থতায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠক

মায়ানমারের সরকারি টিভি চ্যানেল ‘গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মায়ানমার’-এ এ কথা জানিয়েছেন, সামরিক জুন্টা সরকারের মুখপাত্র জ় মিন তুন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩:৩২
Share:

সামরিক জুন্টা সরকারের মুখপাত্র জ় মিন তুন। ছবি: রয়টার্স।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ধারাবাহিক হামলার মুখে শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করল মায়ানমারের সামরিক জু্ন্টা সরকার। চিনের মধ্যস্থতায় রবিবার তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি ফেরাতে আলোচনা শুরু হয়েছে। মায়ানমারের সরকারি টিভি চ্যানেল ‘গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মায়ানমার’-এ এ কথা জানিয়েছেন, সামরিক জুন্টা সরকারের মুখপাত্র জ় মিন তুন।

Advertisement

মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’-এর সঙ্গে জু্ন্টার ওই বৈঠকে চিনের মধ্যস্থতা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক এবং সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মতে এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে ‘স্থিতিশীলতা’ ফেরানোর অছিলায় মায়ানমারে চিনা পিললস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) ঢুকতে পারে।

তা ছাড়া চাপে থাকা জুন্টা সরকারের উপর প্রভাব খাটিয়ে মায়ানমারকে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড ইনিশিয়েটিভ’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাধ্য করতে পারে শি জিনপিং সরকার। যা নয়াদিল্লির পক্ষে অস্বস্তির কারণ হতে পারে। কারণ, ভবিষ্যতে ওই প্রকল্পের মাধ্যমে রাখাইন প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ কিয়াউকফিউ বন্দর মারফত বঙ্গোপসাগরেরর ‘নাগাল’ পেয়ে যাবে লালফৌজ! ঠিক যে ভাবে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি)-এর সুযোগে আরব সাগরের তীরবর্তী গ্বদর বন্দরে নৌঘাঁটি বানিয়েছে চিনা নৌসেনা।

Advertisement

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মায়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী আউং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিল মায়ানমার সেনা। আড়াই বছরের সেনা সরকার এই প্রথম এত বড় সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সে দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকা বিদ্রোহীদের দখলে চলে গিয়েছে। মায়ানমারের ‘স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল’ (এসএসি)-এর প্রেসিডেন্ট মিয়ন্ত শোয়ে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নভেম্বরে বলেছিলেন, ‘‘দ্রুত, কার্যকরী পদক্ষেপ না-করলে আমাদের দেশ টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে।’’

তিন সংগঠনের ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সর পাশাপাশি বিদ্রোহী বাহিনী ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ), পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)-ও শামিল হয়েছে জুন্টা বিরোধী যুদ্ধে। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। গৃহযুদ্ধের জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। তাঁদের পাঁচ হাজারেরও বেশি মায়ানমারের নাগরিক আশ্রয় নিয়েছেন মিজ়োরামে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement