করোনাভাইরাস টিকার ট্রায়ালে ব্রাজিলে মৃত্যু স্বেচ্ছাসেবকের। ছবি: রয়টার্স।
ব্রাজিলে চলছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী এক স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যুর খবর সামনে এল বুধবার। ব্রাজিলের জাতীয় স্বাস্থ্য নজরদারি সংস্থা (আনভিসা) এই মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। তবে টিকার ওভারডোজের কারণেই ওই স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যু হয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। আদৌ তাঁকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছিল কি না তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে কোনও কোনও রিপোর্টে। তবে এই ঘটনার জেরে ফের প্রশ্নের মুখে ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মের করোনা টিকা। যদিও এই মৃত্যুর জেরে ট্রায়ালের প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে না বলে জানিয়েছে আনভিসা।
এই স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও বিস্তারিত কোনও তথ্য দেয়নি ব্রাজিলের স্বাস্থ্য দফতর। তবে ওই ব্যক্তি যে ট্রায়ালের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সিএনএন ব্রাজিলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৃত ব্যক্তির রিয়ো ডি জেনিরোর বাসিন্দা। কোভিড-১৯ জটিলতার জেরেই ২৮ বছরের ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
এই মৃত্যুর ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি অ্যাস্ট্রাজেনেকাও। যদিও বিষয়টি উদ্বেদের নয় বলে আশ্বস্ত করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে তারা বলেছে, ‘‘ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীরা কন্ট্রোল গ্রুপের হোক বা করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন গ্রুপের, সব ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য সমস্ত মেডিক্যাল ঘটনা খতিয়ে দেখা হয়। ব্রাজিলে এই ঘটনারও মূল্যায়ন করা হবে। তাই এ নিয়ে অযথা উদ্বেগের কারণ নেই। ব্রাজিলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও ট্রায়াল চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছেন।’’
ট্রায়াল শেষ না হলেও অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ডের এই টিকা কেনার পরিকল্পনার কথা ইতিমধ্যেই জানিয়েছিল ব্রাজিলের সরকার। রিয়ো ডি জেনিরোর ফিয়োক্রুজ গবেষণা কেন্দ্রে তা তৈরির কথা ছিল। এই টিকার সঙ্গে জোরদার প্রতিযোগিতা রয়েছে চিনের সিনোভ্যাক টিকার। সাও পাওলোতে দু’টি টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাই চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল চালাচ্ছে। চিকিৎসক মহলের একাংশের ধারণা, ব্রাজিলে অক্সফোর্ড টিকার ভবিষ্যৎকে কিছুটা সমস্যায় ফেলতে পারে এই মৃত্যুর ঘটনা। অ্যাস্ট্রাজেনেকার শেয়ার দরেও প্রভাব ফেলেছে এই ঘটনা।
এর আগে সেপ্টেম্বরের শুরুতে অক্সফোর্ডের টিকার ট্রায়াল চলাকালীন ব্রিটেনে এক স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। যার জেরে সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল ট্রায়াল প্রক্রিয়া। তখন অক্সফোর্ডের তরফে জানানো হয়েছিল, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মানব শরীরে ওই প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সাময়িক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।