আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন আনুষ্ঠানিক ভাবে প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল। ছবি: রয়টার্স।
ঘোষণা হয়েছিল আগেই। সেই প্রতিশ্রুতি মেনে এ বার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা দিল ইউরোপের তিন দেশ—স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়ে। আর তার পরেই পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপ সফরে গেল প্যালেস্টাইনের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ মুস্তাফার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল।
স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে পরিচিত সংগঠন ‘ফাতা’র হাতে রয়েছে প্যালেস্টাইন সরকারের নিয়ন্ত্রণ। মূলত ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং পূর্ব জেরুজ়ালেমে সক্রিয় ওই সংগঠনেরই ঘনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা। বুধবার তিনি সৌদি আরব, কাতার, জর্ডন, তুরস্কের বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পরে মাদ্রিদে গিয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো স্যাঞ্চেজের সঙ্গে বৈঠক করেন।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজ়া ভূখণ্ডে গত আট মাস ধরে ধারাবাহিক ইজ়রায়েলি হামলার আবহে ইউরোপের এই সিদ্ধান্ত ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে ধারণা কূটনৈতিক মহলের একাংশের। ইতিমধ্যে ইউরোপের আর এক দেশ স্লোভেনিয়াও জানিয়েছে, তারা প্যালেস্টাইনকে ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ হিসাবে স্বীকৃতি দেবে। প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গোড়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ১৯৩ দেশের মধ্যে ১৪৩টি দেশ প্যালেস্টাইনকে সদস্য রাষ্ট্র করার পক্ষে ভোট দিয়েছিল।
আমেরিকা এবং তার ঘনিষ্ঠ পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ দেশে ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতার দাবি খারিজ করেছে দীর্ঘ দিন ধরে। কিন্তু এই ঘটনার সেই ধারাবাহিকতায় ইতি টানার সূচনা হল বলে মনে করা হচ্ছে। ইউরোপের তিন দেশ জানিয়েছে, ১৯৬৭ সালের আগেকার সীমানার ভিত্তিতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে এর রাজধানী ধরে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্যালেস্টাইনকে তারা স্বীকৃতি দিচ্ছে।
বুধবার আয়ারল্যান্ড বলেছে, তারা ডাবলিনে প্যালেস্টাইন মিশন এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে নিজেদের কূটনৈতিক দফতরকে দূতাবাসে উন্নীত করবে। একই পদক্ষেপ আগেই নিয়েছে নরওয়ে ও স্পেন। ইউরোপের তিন দেশের এই ঘোষণায় ইজ়রায়েলের উপর চাপ আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ১৯৬৭-র পরে ধারাবাহিক ভাবে প্যালেস্টাইন ভূখণ্ডের বিভিন্ন অংশ জোর করে দখল করেছে তেল আভিব। সাম্প্রতিক যুদ্ধে উত্তর এবং মধ্যে গাজ়াও কার্যত দখল করেছে ইজ়রায়েলি সেনা।