পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। ছবি: সংগৃহীত।
সেনার বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য খেসারত দিতে হতে পারে বলে অবিরত হুমকি পাচ্ছেন তাঁর মেয়ে। পাকিস্তানের গোয়েন্দাপ্রধান তথা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করলেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। শরিফের হুঁশিয়ারি, মেয়ের কিছু হলে তার জন্য দায়ী থাকবেন পাক সেনার শীর্ষ আধিকারিক-সহ দেশের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই প্রধান। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এর দায় এড়াতে পারেন না বলে দাবি নওয়াজের।
মেয়ে মরিয়ম নওয়াজের প্রতি সেনার দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন ৭১ বছরের নওয়াজ। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার টুইটারে একটি ভিডিয়োবার্তাও প্রকাশ করেছেন তিনি। নওয়াজের দাবি, “আপনারা এত নীচে নেমে গিয়েছেন! প্রথমে করাচির যে হোটেল মরিয়ম ছিল, তার দরজা ভেঙে ঢুকেছেন। আর এখন তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন যে তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে। যদি (মরিয়মের) কিছু হয়ে যায়, তবে তার জন্য দায়ী থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, সেনাবাহিনীর প্রধান কমর জাভেদ বাজওয়া, আইএসআই প্রধান লেফ্টেটেন্যান্ট জেনারেল ফৈজ হামিদ এবং জেনারেল ইরফান মালিক।”
২০১৯ সালের নভেম্বর থেকেই লন্ডনে রয়েছেন নওয়াজ। আল-আজিজিয়া মিলস দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল তাঁর। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে লাহৌর হাইকোর্টে ৪ সপ্তাহের জামিনে ছাড়া পান তিনি। এর পর ইমরান খান সরকারের অনুমতিতে দেশ ছাড়েন নওয়াজ। সে সময় থেকে দেশের বাইরেই রয়েছেন তিনি।
নওয়াজ দেশ ছাড়লেও রাজনীতিতে রীতিমতো সক্রিয় রয়েছেন তাঁর মেয়ে তথা পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সহ-সভাপতি মরিয়ম। আর্থিক তছরুপের মামলায় গ্রেফতারির পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বার বার সেনা এবং ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি। বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেহাল অর্থনীতির মতো নানা বিষয়ে পাক সরকারের বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
মরিয়মের মতোই সেনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নওয়াজ। পাক রাজনীতিতে সেনার ক্ষমতা বিস্তার তথা অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা নিয়ে তিনি কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন। সেনার শীর্ষকর্তাদের লক্ষ্য করে তাঁর দাবি, “২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে রিগিং করে ইমরান খানের মতো অযোগ্য ব্যক্তিকে দেশের গদিতে বসিয়েছেন আপনারা (সেনাকর্তারা)। সেনেটে হারের পরও আপনাদের নির্বাচিত (প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান) আস্থাভোটে জিতে যান আপনাদের সাহায্যে। এটা আর গোপন নেই। আপনাদের এই কাজের জন্য লজ্জা হওয়া উচিত। যা করেছেন, তার জন্য জবাব দিতে হবে।”
নওয়াজের টুইট-বার্তার পর সেনার বিরুদ্ধে ফের সরব হতে দেখা গিয়েছে মরিয়মকে। টুইটারে তাঁর অভিযোগ, সেনার তরফে তাঁকে হুমকি দেওয়া ছাড়াও অশ্রাব্য ভাষায় কটূক্তি করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, শুক্রবার সেনেটের চেয়ারম্যান নির্বাচনেও ইমরান খান সরকারের প্রার্থীকে জেতাতে পিএমএল-এন নেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছেন পাক গোয়েন্দারা।