মুখোমুখি: ওয়াশিংটনে মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োর সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ছবি: রয়টার্স।
আমেরিকার টুইন টাওয়ার ধ্বংসের মূল চক্রী, আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেন কোথায় লুকিয়ে ছিলেন, সেই খবর তাঁর দেশের গুপ্তচরেরাই আমেরিকাকে দিয়েছিলেন বলে দাবি করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম আমেরিকা সফরে এসেছেন ইমরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাল বৈঠকও সেরেছেন। তার পরেই একটি মার্কিন টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে শো-এর সঞ্চালকের কাছে ইমরান দাবি করেছেন, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই মার্কিন প্রশাসনকে ওসামা সম্পর্কে এমন তথ্য দিয়েছিল, যা পরবর্তী কালে মার্কিন গোয়েন্দাদের এই জঙ্গি নেতাকে খুঁজে বার করতে অনেক সাহায্য করেছিল।
২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে বিন লাদেনের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে মেরেছিল মার্কিন সেনার বিশেষ শাখা নেভি সিল। পাকিস্তান সরকার তখন অবশ্য দাবি করেছিল, ওসামা যে পরিবার নিয়ে অ্যাবটাবাদে
আশ্রয় নিয়েছেন, সে খবর তাদের কাছে ছিল না। ২০১৩ সালে ফাঁস হওয়া একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযান শুরু হওয়ায় ২০০২ সালের গোড়ায় সেখান থেকে পাকিস্তান ঢোকেন ওসামা। ২০০৫ সাল নাগাদ অ্যাবটাবাদে থাকা শুরু করেন বিন লাদেন। তার পর টানা ছ’বছর তিনি সেখানেই ছিলেন। তার পরেও পাক গোয়েন্দারা কী ভাবে তাঁর উপস্থিতি টের পেলেন না, সে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল সেই রিপোর্টে। ২০১৫ সালে পাক সেনার দুই কর্তা সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানান তাঁদের গোয়েন্দারাই তৎকালীন ওবামা প্রশাসনকে ওসামার ঘাঁটি নিয়ে প্রাথমিক তথ্য দিয়েছিলেন। যদিও আমেরিকা সম্পূর্ণ নিজস্ব কায়দায় রাতের অন্ধকারে অভিযান চালায়। সেই অভিযানে পাক সরকারকে শামিল করা হয়নি।
জঙ্গিদের মদত দেওয়ার যে অভিযোগ পাক সরকারের বিরুদ্ধে বার বার উঠেছে, তা নিয়ে শো-এর সঞ্চালক প্রশ্ন করেছিলেন ইমরানকে। যার জবাবে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওসামার ঠিকানা নিয়ে তো আইএসআই-ই প্রথম তথ্য দেয় সিআইএ-কে। আপনি যদি মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাকে জিজ্ঞেস করেন, ওরাও বলবে ওসামার ঠিকানার প্রাথমিক তথ্য ফোনের মাধ্যমে ওদের দিয়েছিল আইএসআই।’’ এর থেকে বেশি কিছু বলতে চাননি ইমরান। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র কোনও আধিকারিকও এ নিয়ে মুখ খোলেননি।
যে চিকিৎসকের সাহায্যে ওসামার অবস্থান সম্পর্কে আমেরিকা নিশ্চিত হয়েছিল বলে জানা যায়, সেই শাকিল আফ্রিদি এখনও পাকিস্তানের জেলে বন্দি। তাঁর মুক্তি নিয়ে ইমরানকে প্রশ্ন করেছিলেন শো-এর সঞ্চালক। যার জবাবে পাক প্রধানমন্ত্রী সাফ বলেছেন, ‘‘এটা খুবই সংবেদনশীল বিষয়। শাকিলকে পাকিস্তানে বিদেশি সরকারের চর বলে মানা হয়।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।