ফুটপাথে ঘুমিয়ে থাকা শিশুকে পিষে দিয়েছে ট্রাক থেকে খুলে আসা বড় চাকা। —প্রতীকী চিত্র।
চলন্ত ট্রাক থেকে চাকা খুলে এসে পিষে দিল তিন মাসের একরত্তিকে। ফুটপাথে ঘুমোচ্ছিল ওই শিশু। তার বাবা এবং মা কাছেই কাজ করছিলেন। তাঁদের চোখের সামনেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
গুজরাতের নডীয়াদ শহরের ঘটনা। শিশুটির বাবা এবং মায়ের বয়স যথাক্রমে ২০ এবং ১৯। একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে দিনমজুরের কাজ করছিলেন তাঁরা। ফুটপাথে শুইয়ে রেখেছিলেন সন্তানকে। মাত্র তিন মাস বয়সি ওই শিশু ফুটপাথের বিছানায় নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছিল। কিন্তু আচমকা ঘটে বিপত্তি। রাস্তা থেকে ছুটে আসে ট্রাকের বিশাল চাকা।
পুলিশ জানিয়েছে, বড় রাস্তার ধারেই শুইয়ে রাখা হয়েছিল শিশুটিকে। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে কোনও কারণে ট্রাকে ঝাঁকুনি হয়। ট্রাকের পিছনে রাখা অতিরিক্ত চাকাগুলি থেকে একটি খুলে ছিটকে বেরিয়ে আসে। গড়িয়ে গড়িয়ে সেই চাকা ফুটপাথের দিকে এগিয়ে যায়। শিশুটির বাবা এবং মা সামনেই ছিলেন। তাঁরা চাকাটিকে আটকাতে ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু সময়মতো পৌঁছতে পারেননি।
গুরুতর জখম অবস্থায় শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে ওই শিশুর পরিবার। অতিরিক্ত চাকাগুলি সঠিক ভাবে রাখা ছিল না বলে অভিযোগ। ট্রাকটিকে আটকানো হয়েছিল। অবহেলায় মৃত্যু ঘটানোর দায়ে নডীয়াদ টাউন পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৬ ধারায় এফআইআর দায়ের করেছে। তবে শিশুর পরিবারের জন্য এখনও কোনও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়নি।
এই ঘটনার পর নির্মাণস্থলে শিশুদের পরিচর্যার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা কতটা প্রয়োজন, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই শিশু অধিকার সুরক্ষা সংস্থাগুলি এ বিষয়ে সরব। যাদের বাবা-মা নির্মাণস্থলে কাজ করতে বাধ্য হন, সেই সব শিশুর জন্য বিশেষ ব্যবস্থার দাবি আরও জোরালো হয়েছে গুজরাতের ঘটনার পর। শিশুর পরিবারের সদস্যেরাও জানিয়েছেন, এই ধরনের ব্যবস্থা রাখা হলে একটি প্রাণ বাঁচানো যেত।