জুনেইদ হাফিজ। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
কোরান এবং মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার জেরে এক অধ্যাপককে মৃত্যুদণ্ড দিল পাকিস্তানের একটি আদালত।
ধর্মীয় অবমাননা পাকিস্তানে বরাবরই গুরুতর বিষয়। অপরাধ প্রমাণ হলে সাজা হয় মৃত্যুদণ্ড। আবার অপরাধ প্রমাণ না হওয়া সত্ত্বেও অভিযুক্তকে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনাও সামনে এসেছে।
এমন পরিস্থিতেই ২০১৩-র মার্চে ফেসবুকে মহম্মদ এবং কোরান সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করে কট্টরপন্থীদের রোষে পড়েন মুলতানের বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ৩৩ বছরের জুনেইদ হাফিজ। তাঁকে গ্রেফতার করে ধর্মদ্রোহের মামলা দায়ের করে পুলিশ।
সেই থেকে এত দিন ধরে মামলার শুনানি চলছিল। এর মধ্যে একাধিক বার বিচারপতি বদলি হয়েছেন। শুনানিও স্থগিত হয়েছে অসংখ্য বার। শেষমেশ শনিবার তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় মুলতানের একটি আদালত। নিম্ন আদালতের এই রায়কে লাহৌর হাইকোর্টে তাঁরা চ্যালেঞ্জ জানাবেন বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন জুনেইদের আইনজীবী আসাদ জামাল।
এর আগে, আদালতে হাফিজের হয়ে লড়ছিলেন সে দেশের প্রখ্যাত সমাজকর্মী তথা আইনজীবী রশিদ রহমান। সেইসময় বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের বিরুদ্ধে তাঁকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২০১৪ সালে খুন হন রশিদ রহমান। এই মুহূর্তে তিনিও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন আসাদ জামাল। নিরাপত্তাজনিত কারণে জুনেইদ হাফিজকেও জেলের মধ্যে আলাদা কুঠুরিতে রাখা হয়েছে।
তবে হাফিজই প্রথম নন, ২০১৮ সালে প্রকাশিত মার্কিন আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশনের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ধর্মদ্রোহের অভিযোগে কমপক্ষে ৪০ জন এই মুহূর্তে পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলে বন্দি রয়েছেন। কেউ সাজা পেয়েছেন, কারও শাস্তি ঘোষণা সময়ের অপেক্ষা। সাজাপ্রাপ্তদের অনেকেই পেয়েছেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। বাকিরা মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন। ওই একই অভিযোগে দীর্ঘ এক দশক সেখানে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন আসিয়া বিবি। প্রমাণের অভাবে গত বছর অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্টে অব্যাহতি পান তিনি।