ড্যানিয়েল পার্ল—ফাইল চিত্র।
মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লের হত্যা-মামলায় ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত আল কায়দা নেতা আহমেদ ওমর সইদ শেখের মৃত্যুদণ্ড আজ খারিজ করল পাকিস্তানের আদালত। অপহরণের দায়ে তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের হাইকোর্ট। ওমর ইতিমধ্যেই ১৮ বছর পাক জেলে কাটিয়েছে। তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, পাক সরকার যদি আপিল না করে তা হলে কয়েক দিনের মধ্যেই জেল থেকে মুক্তি পেতে পারে ওমর। ওই মামলায় অভিযুক্ত আরও তিন জনকে মুক্তি দিয়েছে পাক হাইকোর্ট।
২০০১ সালে আমেরিকায় জঙ্গি হামলার পরে পাক জঙ্গি সংগঠন, আল কায়দা ও পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মধ্যে যোগ নিয়ে খোঁজ শুরু করেন পার্ল। ২০০২ সালে করাচি থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। পরে তাঁর হত্যার ভিডিয়ো প্রকাশ করে জঙ্গিরা। একই কায়দায় পরে বহু হত্যার ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে আইএস-সহ নানা জঙ্গি সংগঠন।
পার্লের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিশ্বে হইচই শুরু হয়। ঘটনার অল্প দিনের মধ্যেই ওমর সইদ-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে পারভেজ মুশারফ সরকার। পাঁচ মাস পরে সইদকে মৃত্যুদণ্ড দেয় পাকিস্তানের নিম্ন আদালত। এর আগে ১৯৯৪ সালে বিদেশি পর্যটকদের অপহরণ করার দায়ে ভারতে গ্রেফতার হয়েছিল সইদ। অপহৃত ভারতীয় বিমান আইসি-৮১৪-এর যাত্রীদের বিনিময়ে জইশ নেতা মৌলানা মাসুদ আজহার ও আর এক জঙ্গি নেতা মুস্তাক জারগারের সঙ্গে সইদকেও মুক্তি দেয় ভারত সরকার।
পার্ল-হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত চার জনই গত ১৮ বছর পাকিস্তানের জেলে রয়েছে। সিন্ধু হাইকোর্টে তাদের আইনজীবীরা জানান, হত্যাকাণ্ডে ওই জঙ্গিদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ করতে পারেনি সরকার পক্ষ। সেই যুক্তি মেনে নিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মহম্মদ করিম খান আগার বেঞ্চ। আমেরিকার জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষকও এক রিপোর্টে জানিয়েছিলেন, ওমর ও তার সঙ্গীরা পার্লের অপহরণে জড়িত থাকলেও হত্যায় জড়িত ছিল না। মার্কিন গোয়েন্দাদের একাংশের মতে, পার্লকে হত্যা করেছিল আর এক আল কায়দা জঙ্গি খালিদ শেখ মহম্মদ। করোনাভাইরাস আতঙ্কের জেরে পাক বিচার বিভাগ আংশিক চালু রয়েছে। তাই এই মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় এখনও প্রকাশিত হয়নি।