প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মুম্বইয়ের নব সেভা সমুদ্রবন্দরে আটক জাহাজে পাচার করা হচ্ছিল ‘পারমাণবিক পণ্য’। তদন্তের পর তেমনই দাবি করছেন গোয়েন্দারা। গত ২৩ জানুয়ারি জাহাজটিকে আটক করা হয়। শনিবার শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, জাহাজে যে পণ্য উদ্ধার হয়েছে তা পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পে ব্যবহার হয়।
গত ১৭ জানুয়ারি চিন থেকে জাহাজটি রওনা দেয়। যাচ্ছিল করাচিতে। গোপন সূত্রে শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা খবর পান মাল্টার পতাকা লাগানো ‘সিএমএ সিজিএম অ্যাটিলা’ নামে একটি জাহাজে সন্দেহজনক কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেই খবর পেয়েই নব সেবা বন্দরে জাহাজটিকে আটক করা হয়।
শুল্ক দফতর এবং ডিআরডিও-র একটি দল জাহাজের ওই পণ্য খতিয়ে দেখে। শুল্ক দফতর সূত্রে খবর, জাহাজে কম্পিউটার নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল মেশিন (সিএনসি) নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কোনও পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য এই ধরনের যন্ত্রকে ব্যবহার করার উদ্দেশ্য ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যে যন্ত্রগুলি পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেগুলি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানের।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানাচ্ছেন, যে সিএনসি যন্ত্রগুলি ওই জাহাজে পাওয়া গিয়েছে, এই ধরনের যন্ত্র তাদের পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য ব্যবহার করেছিল উত্তর কোরিয়া। সূত্রের খবর, জাহাজ এবং পণ্যের নথি খতিয়ে দেখার পর জানা গিয়েছে, জাহাজটি সাংবাই জেএক্সই গ্লোবাল লজিস্টিক্স নামে একটি সংস্থার। পণ্যা পাঠানো হচ্ছিল পাকিস্তান উইংস প্রাইভেট লিমিটেড নামে সিয়ালকোটের একটি সংস্থায়। তবে আরও তদন্ত করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, জাহাজটি তাইউয়ান মাইনিং ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট নামে একটি সংস্থার। পাকিস্তানের কসমস ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি সংস্থায় ওই পণ্য পাঠানো হচ্ছিল।
এই প্রথম নয়, এর আগেও চিন থেকে পাকিস্তানে পাঠানো সেনাসামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছিল ভারতের জলসীমায়। ঘটনাচক্রে, সেই সময় থেকেই কসমস ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থাটি নজরে ছিল গোয়েন্দাদের। এই সংস্থাটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পণ্য সরবরাহ করে পাকিস্তানে। ইটালির তৈরি থার্মোইলেক্ট্রিক সরঞ্জাম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার সময় ২০২২ সালের ১২ মার্চ একটি জাহাজ বাজেয়াপ্ত হয়। গোপনে সেই পণ্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই জাহাজটিকে নব সেবা বন্দরে আটকে দেওয়া হয়।