ধর্মদ্রোহে মৃত্যুদণ্ড থেকে মুক্ত আসিয়া

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী, ৪৭ বছরের আসিয়া চার সন্তানের মা। ২০০৯ সালে তাঁর বিরুদ্ধে অন্য ধর্ম সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ আনেন তাঁরই কিছু প্রতিবেশী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৯
Share:

কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। বুধবার ইসলামাবাদে। ছবি: এপি।

ধর্মদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ২০০৯ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। ২০১৪ সালে লাহৌর হাইকোর্টেও বহাল ছিল সেই সাজা। বুধবার কিন্তু আসিয়া বিবিকে মুক্তি দিল পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে গোটা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ।

Advertisement

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী, ৪৭ বছরের আসিয়া চার সন্তানের মা। ২০০৯ সালে তাঁর বিরুদ্ধে অন্য ধর্ম সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ আনেন তাঁরই কিছু প্রতিবেশী। ধর্মদ্রোহ আইনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আসিয়াই ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম মহিলা, যাঁকে ওই আইনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আসিয়া অবশ্য প্রথম থেকেই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন ।

এ দিন লাহৌর হাইকোর্টের রায় খারিজ করে প্রধান বিচারপতি শাকিব নিসারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছে, এই মামলায় এমন কোনও প্রমাণ দাখিল করা হয়নি, যা আসিয়াকে সন্দেহাতীত ভাবে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে। বরং প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, ‘‘সহনশীলতাই ইসলামের মূল ভিত্তি।’’

Advertisement

এখন লাহৌরের কাছে শেইকিপুরা জেলে রয়েছেন আসিয়া। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, অন্য কোনও মামলা না থাকলে আসিয়া এখনই জেল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। আসিয়ার আইনজীবী সইফুল মুলুক বলেন, ‘‘এই দিনটি আমার জীবনে সবচেয়ে খুশির দিন।’’ সূত্রের খবর, পাকিস্তানে প্রাণসংশয় থাকায় এর পরে হয়তো দেশ ছাড়তে পারেন আসিয়া। তবে কোন দেশে যাবেন, ঠিক হয়নি। কানাডা জানিয়েছে, আসিয়াকে তারা আশ্রয় দিতে চায়।

তিন সপ্তাহ আগেই আসিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তে পৌঁছে গিয়েছিল পাক সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু প্রতিবাদ এবং হুমকির আবহে রায় ঘোষণা করতে দেরি হল। বস্তুত এই মামলাকে কেন্দ্র করে ধর্মদ্রোহ আইন নিয়ে প্রথম থেকেই পাকিস্তানে বিতর্ক ছড়িয়েছে। আসিয়াকে সমর্থন করার জন্য ২০১১ সালে খুন হয়ে গিয়েছিলেন পঞ্জাব প্রদেশের প্রাক্তন গভর্নর সলমন তাসির। এক মাস পরে একই কারণে ইসলামাবাদে খুন করা হয় মন্ত্রী শাহবাজ ভাট্টিকেও।

এ দিনও পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষোভ হয় লাহৌর, রাওয়ালপিন্ডিতেও। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘করাচির রাস্তায় টায়ার জ্বেলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। প্রতিবাদীদের জমায়েতে করাচির বহু জায়গা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।’’ এ দিন কোর্টেও মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনী। রাতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এক ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীদের বলছি, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্বর চড়াবেন না। তা হলে রাষ্ট্রও কিন্তু আপনাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement