লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
শহরে বড় কোনও কর্মসূচি, মিছিল বা সমাবেশ থাকলে কিংবা ভিভিআইপি কারও বাড়ির নিরাপত্তায় লালবাজারের তরফে তৈরি করা হয় বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা। কোন কোন ইউনিট, থানা কিংবা ডিভিশনের কত জন পুলিশকর্মী সংশ্লিষ্ট কর্মসূচিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন, তা ঠিক করা থাকে এই ব্যবস্থায়। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছিল, এর পরেও কিছু ক্ষেত্রে পুলিশকর্মীর ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। সেই সমস্যার সমাধানে লালবাজারের তরফে এক নির্দেশে সমস্ত থানাকে জানানো হয়েছে, এ বার থেকে বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থায় কোনও পুলিশকর্মী অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না। অর্থাৎ, যত সংখ্যক পুলিশ চাওয়া হবে, সেটাই যাতে নির্দিষ্ট দিনে থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সোমবারই থানাগুলিকে এই নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এ-ও বলা হয়েছে, কোনও পুলিশকর্মী অনুপস্থিত থাকলে কিংবা বাহিনীর ঘাটতি থাকলে তার সুনির্দিষ্ট কারণ জানাতে হবে।
পুলিশের মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনীতে এমন নির্দেশিকা জারি করার দরকার হল কেন?
লালবাজার সূত্রের খবর, ইদানীং দেখা যাচ্ছিল, মিছিল-সমাবেশে বা কোনও বিশেষ স্থানের পাহারায় আলাদা পুলিশি ব্যবস্থা করার পরেও ঘাটতি থেকে যাচ্ছে পুলিশকর্মীর। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট দিনে এবং নির্দিষ্ট জায়গায় যাঁদের ডিউটি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ না উপস্থিত হওয়ায় আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ছিল। এক পুলিশকর্তা জানান, সেই প্রবণতা ঠেকাতেই এমন নির্দেশ জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, শহরের বাসিন্দা এক ভিভিআইপি-র বাড়িতে যাতে কোনও ভাবেই পুলিশকর্মীর ঘাটতি না হয়, তার জন্য কিছু দিন আগেই লালবাজারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাহিনীতে কর্মীর ঘাটতির কারণ কী? পুলিশের একটি অংশ জানাচ্ছে, বর্তমানে কলকাতা পুলিশের সমস্ত স্তর মিলিয়ে কর্মী থাকার কথা ৩৫,৮৯১ জন। অথচ,
চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারির হিসাব বলছে, সেই জায়গায় রয়েছেন ২২,৯১৬ জন কর্মী। অর্থাৎ, ওই সময়ে শূন্য পদ ছিল ১২,৯৭৫টি। বাহিনীতে নিয়োগ হলেও এই ঘাটতি সম্পূর্ণ ভাবে মেটেনি। আর এর ফলে সব চেয়ে বেশি ভুগছে থানাগুলি। অভিযোগ, বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থায় থানা বা ইউনিটগুলি থেকে যত সংখ্যক পুলিশ চাওয়া হচ্ছে, তা তারা দিতে পারছে না। তা আটকাতেই লালবাজারের এই নির্দেশিকা বলে মনে করছে পুলিশ মহলের একাংশ।