অন্য দেশের কাছে হাত পাতা নিয়ে তাঁর অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। ফাইল চিত্র।
খাবারের জন্য লুঠতরাজ শুরু হয়েছে পাকিস্তানে। কিন্তু তার পরও ধার চাইতে লজ্জা করছে দেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের। একটি সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি সেই লজ্জার কথা জানিয়েছেন। পাকিস্তানেরই একটি সংবাদ মাধ্যম নিউজ ইন্টারন্যাশনালে প্রকাশিত প্রতিবেদন সত্যি হলে, শাহবাজ যা বলেছেন তার অর্থ, পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র দেশ হয়েও বিদেশের কাছে হাত পাতছে পাকিস্তান। এটাই লজ্জার বিষয়।
শনিবার পাকিস্তানের আমলা নিয়োগের পরীক্ষা পিএএস উত্তীর্ণদের নিয়ে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন শাহবাজ। সেই অনুষ্ঠানেই পাক-প্রধানমন্ত্রী নিজের এই বিব্রতবোধের কথা জানিয়েছেন। ওই সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, সরকারি অনুষ্ঠানে শাহবাজ প্রকাশ্যেই মন্তব্য করেন, ‘‘বিদেশে থেকে অর্থ ধার নেওয়া কোনও সমাধান হতে পারে না। কারণ ওই অর্থ ফেরতযোগ্য এবং পাকিস্তানকেই তা সুদ-সহ ফেরাতে হবে।’’ তবে একই সঙ্গে অন্য দেশের কাছে অর্থের জন্য হাত পাতা নিয়ে তাঁর অসন্তোষের কথাও জানিয়েছেন। পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যমের কথায়, শাহবাজ বলেছেন, ‘‘যে দেশের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, তাদের ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে, এটাই লজ্জাজনক বিষয়।’’
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের আর্থিক সঙ্কট চরমে পৌঁছেছে গত কয়েক মাসে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খাদ্য সঙ্কটও। সম্প্রতি পাকিস্তান সঙ্কটের বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো এবং ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, কোথাও খাবারের জন্য লুটপাট চলছে তো কোথাও খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি-মারামারি। কোথাও খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মারাও গিয়েছেন সাধারণ নাগরিকেরা। রুটি যে দেশের মূল খাবার, সে দেশ জুড়ে দেখা দিয়েছে গমের আকাল। লাফিয়ে বেড়েছে গম এবং আটা-ময়দার দাম। পাকিস্তান ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিক্স (পিবিএস)-এর তথ্য বলছে, এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের দামও। যে পেঁয়াজের দাম ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রতি কেজি ৩৬ পাক রুপি ছিল, এ বছরের জানুয়ারিতে সেই পেঁয়াজের দামই পৌঁছেছে কেজি প্রতি ২২০ পাক রুপিতে। অর্থাৎ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ৫০০ শতাংশের উপর। এ ছাড়াও দাম প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে মুরগীর মাংস, দুধ, পাঁউরুটি, কলার মতো নিত্যদিনের জিনিসপত্রের।