পাকিস্তানের সংসদের ইঁদুরের উপদ্রব। — প্রতীকী চিত্র।
আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানের নয়া মাথাব্যথা ইঁদুর। পাক সংসদে ধেড়ে ইঁদুরের উপদ্রবে কার্যত টেকা দায়। নষ্ট হচ্ছে জরুরি নথি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ‘হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা’র খোঁজে পাক প্রশাসন। অবশেষে তা মিলেওছে। সংসদ ভবনের ইঁদুরের উৎপাত সামাল দিতে শিকারি বিড়াল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। সেই মতো ১২ লাখ পাকিস্তানি রুপি (ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার কিছু বেশি) বরাদ্দও করা হয়েছে।
পড়শি দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, পাকিস্তানের সংসদে ইঁদুরে সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। নষ্ট হচ্ছে প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় নথিপত্র। জাতীয় পরিষদ ও সেনেট— সংসদের উভয় কক্ষেই একই অবস্থা। শুধু নথিপত্র নয়, সঙ্গে কম্পিউটারের তারও কেটে ফেলছে ইঁদুর। এই অবস্থায় সংসদ ভবনে শিকারি বিড়াল ছাড়ার পাশাপাশি ইঁদুর ধরার ফাঁদ পাতার পরিকল্পনাও করা হয়েছে। একইসঙ্গে বেসরকারি সংস্থার থেকেও সাহায্য নিচ্ছে তারা।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি সূত্রে খবর, এই সমস্যা প্রথম ধরা পড়েছিল যখন এক সরকারি কমিটি ২০০৮ সালের একটি বৈঠকের নথি জোগাড় করার চেষ্টা করে। নথিপত্র ঘাঁটতে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ কাগজই ইঁদুরে খেয়ে নিয়েছে। সবথেকে বেশি ইঁদুর রয়েছে সংসদ ভবনের দোতলায়। এই দোতলাতেই বিরোধী দলনেতার দফতর। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ও সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকও হয় সেখানেই। দিনের বেলা লোকজনের আনাগোনা থাকায়, ইঁদুরের দেখা খুব একটা দেখা মেলে না। কিন্তু রাত হলেই সংসদ ভবনে ‘বিশেষ অধিবেশন’ বসায় ইঁদুরের দল।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের মুখপাত্র জ়াফর সুলতান বিবিসিকে জানিয়েছেন, সংসদ ভবনের ইঁদুরের আকার দেখে ঢোঁক গিলবে বিড়ালও। জাতীয় পরিষদের এক আধিকারিকের কথায়, “সন্ধের পর যখন লোকজন থাকে না, তখন ইঁদুরগুলি এমন দৌড়াদৌড়ি শুরু করে যেন ম্যারাথনে নেমেছে। এখানকার কর্মীরা এতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু প্রথম বার কেউ এলে ভয় পেয়ে যান।”
আর্থিক অনটনে জেরবার দেশের ইঁদুর সমস্যার কথা জানাজানি হতে টিপ্পনীর রোল উঠেছে সমাজমাধ্যমে। পাক জনতা বলছে, দেশে সবসময়ই শাসক ও সেনার মধ্যে ইঁদুর-বিড়ালের লড়াই চলে। এবার সংসদেও সেই লড়াই দেখার ‘সৌভাগ্য’ হবে।