ইমরান খান। ফাইল চিত্র।
পাক আইনসভার পাটিগণিতের হিসেবে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে তাঁর সরকারের পতন নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু বিশেষ অধিবেশন মুলতুবি করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সাময়িক স্বস্তি দিলেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার আসাদ কাইজার।
শুক্রবার বিরোধীদের তরফে অনাস্থা পেশের আগেই সোমবার পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবির ঘোষণা করেন। তার আগে বিধি মেনে অধিবেশনের সূচনায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রফিক তারার-সহ সদ্যপ্রয়াত বিশিষ্টদের স্মরণ করা হয়।
আসাদ জানিয়েছেন, পাক পার্লামেন্টের বিধি অনুযায়ী প্রয়াতদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব গ্রহণের পর প্রথম দিনের অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। তিনি সেটাই করেছেন। যদিও বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ তুলেছে। পাক সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে শুক্রবার ট্রেজারি বেঞ্চের তুলনায় বিরোধী সদস্যদের উপস্থিতি অনেক বেশি ছিল। ফলে ভোটাভুটি হলে ইমরানের হারার সম্ভাবনা ছিল প্রবল।
৩৪২ আসনের পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ‘জাদু সংখ্যা’ ১৭২। ইমরানের নিজের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সদস্য ১৫৫ জন। চলতি সপ্তাহে ইমরান সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি)-এর ৭, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ)-এর ৫ এবং বালুচিস্তান আওয়ামি পার্টি (বিএপি)-র ৫ সদস্য রয়েছেন। অন্য দিকে, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এবং পাকিস্তান পিপল্স পার্টি (পিপিপি)-র নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত বিরোধী জোটের সদস্য ১৬২ জন।
তা ছাড়া ইমরানের দলের ১৫৫ জন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি সদস্যের মধ্যে বেশ কয়েক জন ইতিমধ্যেই বিরোধী জোটকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। পাক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার ভোটাভুটি হলে পাক ক্রিকেটার-রাজনীতিকের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা কার্যত অসম্ভব ছিল।
প্রসঙ্গত, ইমরান সরকারের ব্যর্থতার জন্যই পাকিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতি ক্রমশ বেহাল হচ্ছে এবং মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছুঁয়েছে বলে অভিযোগ তুলে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে বিরোধীরা। চাপের মুখে ইমরান কখনও বিরোধী নেতাদের উদ্দেশে আপত্তিজনক মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়িয়েছেন, কখনও ‘আলু-পেঁয়াজের দাম ঠিক করতে রাজনীতিতে আসিনি’ বলে সমালোচনার মুখে পড়েছেন।