আমেরিকায় একটি অনুষ্ঠানে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র
মার্কিন মুলুক থেকে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ বহু প্রতীক্ষীত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করে বিদেশমন্ত্রীর তোপ, পাকিস্তানের দিক থেকে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা প্রত্যাশিত, কারণ তারা সন্ত্রাসে মদত দিতে বিপুল বিনিয়োগ করে রেখেছে। ওয়াশিংটনে হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর আরও বলেন, ৩৭০ রদের পরও পাকিস্তান পুরনো পথেই সন্ত্রাসের চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাত দিনের সফরের রেশ কাটতে না কাটতেই আমেরিকা সফরে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। মোদীর সফরের পরে ইমরান খানও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ফের মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মধ্যেই মার্কিন মুলুকে দাঁড়িয়ে ফের পাকিস্তানের দিকে সন্ত্রাসের তির ছুড়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী। ওয়াশিংটনের ওই অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘আমরা যা করেছি (৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ), সেটা বহু প্রতীক্ষীত। আমার মতে, সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা আরও অনেক আগেই করা উচিত ছিল।”
গত ৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর থেকেই কাশ্মীরে জারি রয়েছে নিয়ন্ত্রণ। মোতায়েন হয়েছিল অতিরিক্ত সেনা। তবে ধীরে ধীরে সেই নিয়ন্ত্রণ উঠছে। প্রায় দু’মাস পর আজই খুলছে উপত্যকার সব স্কুল। জয়শঙ্কর এ দিন বলেন, ৫ অগস্টের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী চূড়ান্ত সংযম দেখিয়েছে। ভারত উপত্যকায় শান্তি চায় বলেও মন্তব্য করেন বিদেশমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: গাঁধীকে নিয়ে টানাটানি, সঙ্ঘ-বিজেপি পুরোদমে লেগেছে গাঁধীর উত্তরসূরি হতে
অন্য দিকে পাকিস্তান প্রশ্নে এ দিন গোড়া থেকেই বিদেশমন্ত্রী ছিলেন আক্রমণাত্মক। তিনি বলেন, “পাকিস্তান কখনওই শান্তি চাইবে না। ওরা এমন পরিস্থিতি তৈরি করবে, যাতে সারা বিশ্বেধ্বংসের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। গত ৭০ বছর ধরে তারা যে গেম প্ল্যান করে আসছে, সেটাই করবে।” একই সঙ্গে তাঁর তোপ, ‘‘কাশ্মীরের জন্য পাকিস্তান বিরাট লগ্নি করে বসে আছে— সন্ত্রাস এবং বিচ্ছিন্নতাবাদ দুই ক্ষেত্রেই। কিন্তু আমরা সেটা কখনওই হতে দেব না।’’
সম্প্রতি ইসলামাবাদ অভিযোগ তুলেছে, ৩৭০ বিলোপের পর নাশকতা বা জঙ্গি কার্যকলাপ যাই হোক, ভারত পাকিস্তানের দিকেই অভিযোগ তুলবে। এই প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘আগে ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে এই মন্তব্যের বিচার করা উচিত। এটা শুধুমাত্র যে ৫ অগস্টের পরে শুরু হয়েছে এমনটা নয়। এটাই ওদের নীতি ও কার্যক্রম যেটা কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার দিন থেকে তারা করে আসছে। সেই সময়ই পাক আক্রমণকারীরা শ্রীনগরকে ওরা জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। দয়া করে ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন।’’
আরও পড়ুন: মমতাকে আশ্বাস দিয়েছেন মোদী, ৪১০০০ কোটি টাকার বকেয়া দাবিপত্র রাজ্যের
৩৭০ রদের পর থেকেই পাকিস্তান নানা ভাবে যুদ্ধের হুমকি দিয়ে আসছে। এমনকি, রাষ্ট্রপুঞ্জে দাঁড়িয়েও পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনেই বিদেশমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘শুধু এটাই নয়, আরও অনেক উদ্বেগজনক বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এমনকি, উঠে এসেছে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রসঙ্গও। এর থেকেই বোঝা যায়, যাঁরা এ সব বলছেন, তাঁরা কতটা দায়িত্বশীল।’’