নওয়াজ় শরিফ। — ফাইল চিত্র।
ধুঁকছে অর্থনীতি। দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত সরকার। বিদেশি রাষ্ট্রগুলি সন্ত্রাসে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বার বার। এই আবহে ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে ভোট। প্রায় ১২ কোটি ৮০ লক্ষ ভোটার নিজেদের প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচন করবেন। আবার কি তখতে ফিরবেন নওয়াজ় শরিফ? জল্পনা তীব্র।
কর ফাঁকি দিতে পানামায় ভুয়ো সংস্থায় বিনিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছিল নওয়াজ়ের। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশ নিতে পারবেন না তিনি। ২০১৯ সালে দেশ ছেড়ে লন্ডন চলে যান। ভোটপূর্ব সমীক্ষা বলছে, আসন্ন ভোটে সেই নওয়াজ়ই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। পাকিস্তানের রাজনীতির করবারিদের একাংশ বলছে, এতে সমর্থন রয়েছে সেনারও। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের নির্বাচনে বড় ভূমিকা রয়েছে পাক সেনার।
এর আগে তিন বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন নওয়াজ়। এক বারও মেয়াদ শেষ করেননি। ১৯৯৯ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পরেই দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয় তাঁকে। তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সেনার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় তাঁর। এর পর দু্র্নীতির অভিযোগ। তার পর দেশছাড়া। গত বছর দেশে ফিরেছেন নওয়াজ। তার পর তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ খারিজ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ভোটে লড়াইয়েরও অনুমতি দিয়েছে। ২০২২ সালে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর প্রধানমন্ত্রী হন নওয়াজ়ের ভাই শাহবাজ শরিফ। তবে এ বার পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন নওয়াজ়ই, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সরকার এবং দলে বড় পদ পেতে পারেন নওয়াজ়ের মেয়ে মারিয়ম নওয়াজ।
পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিতে ইতি টানবেন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ইমরান। তাঁর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, সাংবাদিকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। বিয়ের আইন ভাঙার জন্য তাঁকে এবং স্ত্রী বুশরা বিবিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
দ্বিতীয় বার ভোটে লড়তে চলেছেন বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাবল ভুট্টো জারদারি। ভোটপূর্ব সমীক্ষা বলছে, ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা তেমন নেই পাকিস্তান পিপলস পার্টির। তবে ‘কিংমেকার’ হয়ে সরকার গড়ার জন্য সমর্থন করতে পারে পিপিপি।
৮ ফেব্রুয়ারি দেশে ভোট দেবেন ছ’কোটি ৯০ লক্ষ পুরুষ এবং পাঁচ কোটি ৯০ লক্ষ মহিলা। সে দেশে বুথের সংখ্যা ৯০ হাজার ৫৮২। প্রার্থীর সংখ্যা ৫,১২১। তাঁদের মধ্যে ২৬৬ জন নির্দল। বাকিরা ১৬৭টি রাজনৈতিক দলের সদস্য। দেশের ভোটারদের মধ্যে ৪৪ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছর।