ফাইল চিত্র।
দু’দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে গত কাল ভারতকে এগিয়ে আসার আর্জি জানিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আজ সেই একই সুরে পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া বললেন, অতীতের দ্বন্দ্ব ভুলে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাজওয়ার বক্তব্য, ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে সুস্থিতি এলে সেই সুফল দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পড়বে এবং পূর্ব ও পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগে ইতিবাচক বাতাবরণ তৈরি হবে। পাক সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিবাদের মূল বিষয় কাশ্মীর। শান্তিপূর্ণ উপায়ে কাশ্মীর বিবাদের সমাধান না হলে উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সংশয় থেকে যাবে।’’ দেশের প্রতিরক্ষা নীতি নির্ধারণে ‘ইসলামাবাদ সিকিউরিটি ডায়লগ’-এ গত কাল ইমরান বলেছিলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রথম পা’টা ভারতকেই বাড়াতে হবে।’’ গত মাসে নয়াদিল্লিও বলেছিল, আতঙ্ক ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশে প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় ভারত। কিন্তু হিংসামুক্ত পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব পাকিস্তানকে নিতে হবে।
অতীতে নয়াদিল্লি পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য কথা বললেও সে দেশের সেনা সেই প্রচেষ্টা বানচাল করেছে। এ বার পাকিস্তানের সরকার ও সেনাবাহিনী এক সুরে কথা বলায় বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। নয়াদিল্লিতে কূটনীতিকদের একাংশের মতে, জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর থেকেই ভারতকে বার্তা দিতে শুরু করেছে পাকিস্তান। কিছু দিন আগেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর কথা বলেছিলেন পাক সেনাপ্রধান। ভারত সেই সময়ে জানিয়েছিল, মুখে শান্তির কথা না বলে জঙ্গিদমনে পাকিস্তানকে ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে হবে। আমেরিকায় পালাবদলের পরে থেকেই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিন বিরোধিতার নীতি বজায় রেখে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর প্রয়াস শুরু করে দিয়েছেন বাইডেন। ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার চতুর্দেশীয় অক্ষ ‘কোয়াড’-এর বৈঠক নিয়ে শুরু থেকে আগ্রহ দেখিয়েছেন তিনি। এই মঞ্চে কথাও হয়েছে মোদী-বাইডেনের। চিন-বিরোধী এই অক্ষে ভারতকে শরিক করায় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা স্থাপনে কৌশলগত দিক থেকে ভারতের দর বাড়ছে। যা বুঝে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কথা বলছে পাকিস্তান।